‘দূর কর দুঃশাসন দুরাচার, জনতা জেগেছে যে দুর্বার’- স্লোগানে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে উদীচী যুক্তরাজ্য সংসদ । ২৯ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল এ আয়োজনে গান, কথা, স্মৃতিচারণে পালিত হয় উদীচীর গৌরবের ৫২ বছর।
উদীচী যুক্তরাজ্য সংসদের সভাপতি হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আমিনা আলী ও সহ সভাপতি গোপাল দাসের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন। বিশেষ অতিথি ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল স্পিকার কাউন্সিলর আহবাব হোসেইন। বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আহবায়ক মাহমুদ এ রউফ, সাবেক সভাপতি এবং উপদেষ্টা ডলি ইসলাম, উদীচী যুক্তরাজ্য সংসদের উপদেষ্টা ও সিপিবি সভাপতি কমরেড ডাঃ আহমেদ জামান, যুক্তরাজ্য উদীচীর সদস্য ও উদীচী বৈদেশিক বিভাগের আহবায়ক ডা. রফিকুল হাসান খান জিন্নাহ, যুক্তরাজ্য উদীচী অন্যতম প্রতিষ্টাতা ও উপদেষ্টা সৈয়দ রকিব আহমেদ, সিপিবির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও উদীচীর উপদেষ্টা কমরেড আবিদ আলী, উদীচীর উপদেষ্টা নিসার আহমেদ, উদীচী সহ সভাপতি ও সত্যেন সেন স্কুলের ট্রাস্টি নূরুল ইসলাম, উদীচীর সহ সসম্পাদক জুবের আখতার সোহেল, উদীচীর সেলিনা শাফি, রেহেনা আখতার, সুলতানা জলি, হেলেন ইসলাম, অনুপম রহমান, আমিনূর রহমান খান, তৌহিদ চৌধুরী, সুশান্ত দাস, শামসুদ্দিন আহমেদ, সারথী ভৌমিক, হামিদা ইদ্রিস, জয়নুল আবেদীন রোজ, শিলা আবেদীন, সাম চৌধুরী প্রমুখ।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেন অসীম দে, বাবলু দে, তরা ও মিশেল। গণসংগীত পরিবেশন করেন কেন্দ্রীয় উদীচীর সংগীত বিভাগের শিল্পী রবিউল হাসান। সাংস্কৃতিক পর্বে অংশগ্রহণ করেন সত্যেন সেন স্কুল অফ পারফর্মিং আর্টস -এর শিশু শিল্পী আদ্রিকা, সাবিহা, স্নেহা, অর্পিতা, তরা, ট্রেসী ও মিশেল এবং উদীচীর শিল্পীবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর শিল্পী সংগ্রামী সত্যেন সেন ও রণেশ দাসগুপ্তের হাত ধরে যাত্রা শুরু করেছিলো বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে, বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের অধিকারে সোচ্চার থেকে লড়াই সংগ্রাম ও আন্দোলনে অগ্রভাগে ছিলো উদীচী । মহান মুক্তিযুদ্ধে যেমন উদীচীর শিল্পীরা নেমেছিলেন, তেমনি মানুষের মানসিক প্রেরণা ও যুদ্ধের শক্তি-সাহস যোগাতে কাজ করেছে উদীচী। তারই প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে সম্মানজনক ‘একুশে পদক’ অর্জন করেছে উদীচী।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় বক্তারা বলেন, সাংস্কৃতিক বিপ্লবই পারে সমাজ থেকে সকল অন্ধকার ও কালিমা মুছে দিতে। তাই মানুষের মানবিক ও সাংস্কৃতিক চেতনাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। তার আচার আচরণ ও শিল্পবোধই একজন প্রকৃত মানুষ গঠনে সহায়তা করে। সেই ক্ষেত্রে এই চলমান ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, নিপীড়ন, বিচারবহির্ভুত হত্যা, বিচারহীনতা এবং রাষ্ট্রয়াত্ত পাটকলসহ সকল ক্ষেত্রে এই সহিংসতা ও দুর্নীতি রুখে দিতে মানুষের জাগরণ খুই জরুরী। তাই এবারের স্লোগান ‘দূর কর দুঃশাসন দুরাচার, জনতা জেগেছে যে দুর্বার’। এই মানুষের জাগরণকে প্রাধান্য দিয়ে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে যেতে হবে।