লেবার লিডারশীপ নির্বাচন : দলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ

ব্রিটবাংলা ডেস্ক : লেবার পার্টির লিডারশীপ প্রতিযোগিতায় দলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে। লিডারশীপ প্রতিযোগি স্যার কিয়ার স্টারমার এবং লিসা নন্দীর সমর্থক দলীয় এমপিরা এই অভিযোগ তুলেছেন। লিডারশীপ প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে দলের পক্ষপাতদুস্ট নীতি মোমেন্টাম সমর্থিত লিডারশীপ প্রতিযোগি রেবেকা লংবেইলিকে সমর্থন যোগাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন এমপি।

নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় পছন্দের লিডারশীপ প্রতিযোগির জন্যে ক্যাম্পেইন করার সময় দলের ডাটা বেইজে থাকা সদস্যদের তথ্য ব্যবহার করতে দলের সব এমপিদের বারন করা হলেও তৃনমূলের সংগঠন মোমেন্টাম রেবেকা লং বেইলির পক্ষে ক্যাম্পেইনে সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

https://britbangla24.com/news/99342/

রেবেকা লং বেইলির প্রতি বিদায়ী লিডার জেরেমি করবিনের বিশেষ সমর্থন রয়েছে বলে মনে করা হয়। রেবেকাকে সমর্থন দিয়েছে জেরেমি সমর্থক মোমেন্টাম এবং ইউনাইট। ইউনাইটের জেনারেল সেক্রেটারী লেন ম্যাকক্লাক্সি লেবারের বর্তমান লিডার জেরেম করবিনের সমর্থক। এদিকে তৃনমূলের সংগঠন মোমেন্টামের প্রায় চল্লিশ হাজারের বেশি সদস্য রয়েছে। এছাড়া ডাটা বেইজে থাকা লেবার সদস্যের বিশাল তালিকা তাদের কাছেও রয়েছে। এই তালিকা কাজে লাগিয়ে রেবেকার জন্যে তৃনমূল পর্যায়ের সদস্যদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে মোমেন্টাম। অথচ দলের নিষেজ্ঞার ফলে অন্য প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে বা কেন তাদেরকে ভোট দেওয়া উচিত, এর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে কোন লিফলেট নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার সদস্যদের কাছে পাঠাতে পারছেন না স্যার কিয়ার স্টারমার বা লিসা নন্দী সমর্থক এমপিরা। এমন কি দলীয় ইতিহাসে এবারই প্রথম, লিডারশীপ নির্বাচনের ক্যাম্পেইন চলাকালে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় যোগাযোগ না করতে দলীয় এমপিদের সতর্ক করা হয়েছে।

https://britbangla24.com/news/99050/

গত ৬ জানুয়ারী, দলের হেড কোয়ার্টার থেকে এক ইমেইলে এমপিদের সতর্ক করে বলা হয়, লিডারশীপ নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে কোন ধরনের প্রচারনা চালানোর জন্যে কোন নির্বাচিত প্রতিনিধি বা তাদের স্টাফ দলের তথ্য ভান্ডারে প্রবেশ করে সদস্য তালিকা বা কোন তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন না। এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত হতে পারেন বলেও সতর্ক করা হয়।

এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে হাউসিং সিলেক্ট কমিটির চেয়ার ক্লাইভ বেট বলেছেন, এটা ভুল, পার্লামেন্টারী গ্রুপের সঙ্গে পরামর্শ না করেই এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি স্যার কিয়ার স্টারমারকে লিডারশীপ প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন।

স্যার স্টারমার সমর্থক হ্যাম্পস্টেড এন্ড কিলবার্নের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকার সদস্যদের সঙ্গে অনেক কিছু নিয়ে কথা বলি অথচ দলের জন্য এতো বড় একটি সিদ্ধান্ত আমরা নিতে যাচ্ছি কিন্তু সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে কিছুই শেয়ার করতে পারব না, এটা মেনে নিতে কস্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

লিসা নন্দী সমর্থক লুইশিয়াম এন্ড ডেপ্টফোর্ডের এমপি ভিকি ফক্সক্রিট বলেন, এই মুহুর্তে লেবারের কাছে মাত্র একটি সদস্য তালিকা রয়েছে। আর এই একমাত্র তালিকাটিতে একমাত্র প্রেবেশাধিকার রয়েছে মোমেন্টামের। আর কারো নয়।

এদিকে লেবার পার্টির একজন মূখপাত্র বলেছেন, গণতান্ত্রিক   উপায়ে স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রেখে লিডার এবং ডেপুটি লিডার নির্বাচনের স্বার্থেই দলীয় নীতি অনুযায়ী সব কিছু হচ্ছে। তবে এই নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় নীতির কিছুটা পরিবর্তন এনে এমপিদের নিজ নিজ এলাকায় পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে ক্ষুদ্রাকারে ইমেইল প্রেরনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চুড়ান্ত ব্যালট প্রকাশের পর ১৫ ফেব্রুয়ারি সদস্য তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর ৪ এপ্রিল প্রকাশিত হবে নির্বাচনের ফলাফল।

উল্লেখ্য গত ১২ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ১৯৩৫ সালের পর সবচাইতে ভয়াবহ ভরাডুবি হয় লেবার পার্টির। এর পরপরই বতর্মান লিডার জেরেমি করবিন পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এই প্রেক্ষিতে নতুন লিডার পদে প্রার্থী হবার জন্যে স্যার কিয়ার স্টারমার, লিসা নন্দী, রেবেকা লংবেইলি এবং এমেলি থর্নবারি চেস্টা করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে স্যার স্টারমারকে ৮৮ জন এমপি, লিসাকে ৩১ জন এবং রেবেকাকে ৩৩জন এমপি লিডারশীপ প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন।

Advertisement