সাজুর বইমেলা ও একজন সোয়েব আহমদ চৌধুরী !

আহাদ চৌধুরী বাবু

সাজু একজন কবি একটি শুভ্র তারুণ্য ! সৃষ্টিশীল উর্বর উৎস গুলো আজ যখন ইয়াবা নামক রাজ্যের বাসিন্দা, সংক্রমণে সংক্রমিত সমাজ ও পরিবার ঠিক তখনই আলোর ফেরিওয়ালা হয়ে মোমবাতি নিয়ে সুন্দরের খুঁজে এগিয়ে আসে সৃষ্টিশীল কিছু মানুষ ।

এটাই ধরণীর নিয়ম ! সাজুদের কারনে পুরোনো গুণীরা আবারো আসেন আলোচনায় !

মনে না রাখার সমাজ ও সংস্কৃতিতে আমরা বড়ই স্বার্থপর ।
হারিয়ে যায় পথ ও সেই পথের ধারের ছায়া দেওয়া বটবৃক্ষ !
কিন্তু সব পথ হারায় না ,স্বপ্ন দেখা নাবিক সাজুর দল
সামান্য পুঁজি আর বিশাল সাহস নিয়ে দিন বদলের ডাক দেয় এবং
সম্মান ও ভালোবাসার মঞ্চ সাজায় ।
আর এরকমই একটি মঞ্চের বর্ণাঢ্য আয়োজনে দুই ও তিন তারিখ সোম ও মঙ্গল বার অনুষ্টিত হচ্ছে বইমেলা।
আর এবারের বিভিন্ন আয়োজনে বাড়তি সংযোজন হলো গুণীজন সম্মাননা ও তরুণ কবিদের মূল্যায়ন ।
আর এ ক্ষেত্রে সাজু ভুলে যায়নি পুরোনো বাতি ঘরদের ।
তাদেরই একজন অনেকের চেতনার বাতিঘর মরহুম সোয়েব চৌধুরীর নামে নামকরন করে
সাহিত্য পুরষ্কার ।
নাম করন করে সাজু দায় মেটাতে চায় এবং এটি তার বিশুদ্ধও অন্তরের প্রকাশ ।
সাজু দায়বদ্ধতার নিরিখে কাজটি করলেও আজ সবার নিকট উদাহরণের মাত্রা ।
সাজু যার নামে নামকরণ করেছে তার সম্পর্কে দু এক কলম লেখা উচিত যার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম জানবে এবং সাজুদের কাজের পরিধি বুঝতে পারবে ।
মরহুম সোয়েব আহমদ চৌধুরী ,পিতা মরহুম আলাউদ্দিন চৌধুরী মাতা মরহুমা রেজিয়া খানম চৌধুরী চৌকিদেখীর বাসিন্দা ছিলেন !তার কর্মময় জীবনের কিছু কথা এবং পরিচিতি কাজের ব্যাপ্তি এখানে তুলে ধরলাম।
বিনম্র শ্রদ্ধা তার প্রতি ! একজন মানুষের অকালে চলে যাওয়া কতোটুকু কষ্টের ও বেদনার শোকাহত পরিবার উপলব্দী করতে পারে ২২শে সেপ্টেম্বর জন্ম গ্রহন করেন তিনি।
মৃত্যুকালে বয়স ৫৩ এর কোটায়।
 সহজ সরল ভাবে বলা যায়,একজন ব্যক্তিকে যে ভাবে ছিলেন _অতি সাধারন মানুষ কিন্ত অসাধারন প্রতিভা জ্ঞানী সবজান্তা সৎ সাহসী নিলুর্ভ সাদা মনের মানুষ
মুক্ত মননশীল চিন্তার ধারক ছিলেন।
প্রয়াত সোয়েব আহমদ চৌধুরী
এক সময়ের ছাত্র রাজনীতি প্রগতিশীল গনতান্ত্রিক আন্দোলনের সাহসী নেতা ।
যিনি এরশাদ জান্তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার কারনে গ্রেফতার হন ঢাকার কেন্দ্রিয় কারাগারে ১বছর ছিলেন
তার সাথে তৎকালিন সময়ে গ্রেফতার হন জাকির আহমদ ও আবুল কাহের শামীম
 রাজনীতি করার কারনে কয়েকবার গ্রেফতার হন
তিনি শুধু রাজনীতি নয় এক সময়ে কবিতা ও লিখতেন গঠন করেন ঝংকার সাহিত্য গোষ্ঠি
রঙধনুর হয়ে অনেক গুলো মঞ্চ নাটক করেন
একজন অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে সিলেটে পরিচিতি ছিলো।
 স্কুল বির্তক এবং আন্ত কলেজ চ্যাম্পিয়ান হন
সিলেট এমসি কলেজ ছাত্র সংসদের সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন কলেজ বার্ষিকী উন্মেস সম্পাদনা করেন।
এমসি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ
১৯৭৯-৮০
সিলেট বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপনে ছাত্র প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাহিত্য সম্পাদক ছাড়া সিলেট শহর জাসদ এর সাধারন সম্পাদক ও জেলা জাসদ এর প্রচার সম্পাদক ছিলেন
পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন।
মহানগর এর একজন নেতা ছিলেন
 সিলেট আওয়ামীলীগের পক্ষে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষন কর্মসূচীতে অংশ নেন।
 অল্প বয়সে জনপ্রতিনিধি হন।
সিলেট অঞ্চলের প্রথম ফুটবল এর ধারা ভাষ্যকার ছিলেন।
সিলেট বিভাগীয় ষ্টেডিয়ামের প্রথম সুচনা অর্থাৎ লাক্কাতুরা মাঠ এর প্রতিষ্ঠাদের একজন।
স্পষ্ট ভাষী মানুষ হিসেবে পরিচয় ছিলো।
কারো পিছনে কথা বলা বাঅনিষ্ট সাধন কে তিনি ঘৃনা করতেন।
একজন বই প্রেমিক মানুষ ছিলেন,নিজের সংগ্রহে ছিলো হাজারো বই।
ইংরেজী ভাষার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিলো।
একসময় কলাম লিখতেন
অধুনালুপ্ত দৈনিক আজকেৱ. সিলেট এর সাথে কাজ করেন।
পৃথিবীর সমসাময়িক ঘটনা সহ অনেক গুলো জার্ণাল ও পড়া শুনা করতেন।
সিলেট তথা বৃহত্তর আম্বরখানা এলাকার অনেকের রাজনীতির হাতখড়ি ঘটে তার মধ্যে দিয়ে।
একজন ক্রীকেট ভক্ত মানুষ ছিলেন
সেই ছোট বেলায় দেখতাম রেড়িও কানে নিয়ে শুনতেন।
 বিশেষ করে মেট্রিক পরিক্ষা পাশ করার পর অনেকের হাতে নীহার রঞ্জন গুপ্তের ছোটদের রাজনীতি এবং অথর্নীতি বই তুলে দিয়ে ছিলেন।
চলমান ধারার ছাত্র রাজনীতি বা ছাত্রনেতাদের বলতেন ছত্রাক নেতা।
আজ তার অবর্তমানে তাকে নিয়ে আমার লেখা হয়তো সবকিছু না বলা থেকে যাবে কিন্ত প্রচেষ্টা করছি।
একজন বিনয়ি মানুষ নিজেকে তুলে ধরা বা জাহির করা পচন্দ করতেন না।
মিথ্যা শব্দটি তার চরিত্রের মধ্যে ছিলো অনুপস্থিত।
একজন ভালো বন্ধু ভালো শ্রোতা ও প্রানবন্ত ভালো মানুষ যে ছিলেন তার কর্ম আজ আলোকিত করছে বই মেলা ও সমাজকে !
সাজুর বই মেলা হোক প্রাণের মেলা।সবার সুবিধার
জন্য বইমেলার স্থান ও সময় এবং বিস্তারিত ।

মানবতার কল্যাণে সাহিত্য’ এই স্লোগানকে ধারন করে সিলেট নগরীর ৬নং ওয়ার্ডে শুরু হতে যাচ্ছে দুইদিন ব্যাপী (২-৩ মার্চ) আলোর অন্বেষণ ২য় বইমেলা-২০২০।

উক্ত মেলা আনুষ্ঠানিকভাবে আগামীকাল ২ মার্চ সোমবার সকাল ১০ঘটিকার সময় নগরীর এয়ারপোর্ট রোডের চৌকিদেখীস্থ হযরত শাহ সোলেমান গাজী (র.) মাজার সংলগ্ন মাঠে শুরু হবে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে মেলা চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।

মেলায় সিলেটের স্বনামধন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে স্টল বরাদ্ধ হয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন “আলোর অন্বেষণ” এর উদ্যোগে এই বছর বইমেলায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও বই পড়া প্রতিযোগিতার সাথে নতুন সংযোজন হয়েছে ‘আলোর অন্বেষণ সাহিত্য পুরস্কার-২০২০’।
উল্লেখ্য-বইমেলা থেকে অর্জিত সকল অর্থ সমাজের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে ব্যয় করা হবে।
পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে বাংলা সাহিত্য, ইতিহাস-ঐতিহ্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহ বৃদ্ধি করে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ‘আলোর অন্বেষণ’ উক্ত বইমেলার আয়োজন করতে যাচ্ছে।

আলোর অন্বেষনের পক্ষ থেকে এবার গুণীজন সম্মাননা, মুক্তিযোদ্ধা লেখক সম্মাননা ও পাশাপাশি তরুণ সাহিত্য পুরস্কার ক্যাটাগরিতে ৫ জন সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে।

এবার গুণীজন সম্মাননা পাচ্ছেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় কবি ও সাংবাদিক  আজিজ আহমদ সেলিম। মুক্তিযোদ্ধা লেখক সম্মাননা পাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রী বীরশ্বের সিংহ বাবু।

এদিকে আলোর অন্বেষণ মরহুম সোয়েব চৌধুরী  সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন গল্পে- শরীফুল হাসান শিশির, ছড়ায়- মিনহাজ ফয়সল ও কবিতায়  মাহফুজ জোহা।

মেলায় স্ববান্ধবে উপস্থিত হয়ে বইমেলাকে সফল করতে সাহিত্য প্রেমী সকল বন্ধুদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ‘আলোর অন্বেষণ’ সিলেটের সভাপতি সাজন আহমদ সাজু ও সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জুল হক সুমন।

বইমেলা সংশ্লিষ্ট যে কোন প্রয়োজনে নিম্মলিখিত নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। মোবাইল নং- ০১৭১২ ৩২৬০৯৯

বিশেষ করে যারা উৎসাহিত করেছেন প্রবাসী কবি বিশিষ্টজন শামীম আহমদ ও প্রাক্তন সংস্কৃতি কর্মী শহিদুল ইসলাম মামুন ,এবং কাউন্সিলার ফরহাদ চৌধুরী শামীম সহ আলোর অন্নেষণ সাহিত্য সংগঠন এবং প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সকলকে  ধন্যবাদ ।
(লেখক আহাদ চৌধুরী বাবু নির্বাহী সম্পাদক ব্রিট বাংলা )
Advertisement