১১ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে চলে গেলেন সামিরাও

সিলেটের ওসমানীনগরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর মারা যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মাহিকুল ইসলাম।বাবা-ছেলের পর এবার মেয়ে সামিরা ইসলামও মারা গেছেন শুক্রবার রাত ১টা ২০ মিনিটের দিকে (৬ আগস্ট পূর্বাহ্ন) ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাপসাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাঈন উদ্দিন সামিরার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।গত ২৫ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোতে যান প্রবাসী পরিবারের ৫ সদস্য। তারা হলেন- যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তার ছোট ছেলে মাহিকুল ইসলাম (১৮)রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) ও সামিয়া ইসলাম (২০)। তাদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ও ছেলে মাহিকুল ইসলাম মারা যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় অন্যদের ওসমানী ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে মা ছেলে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন। কিন্তু ১১দিনেও ফেরেনি সামিরার জ্ঞান। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিষক্রিয়ায় সামিরার কিডনি, লিভার কাজ করছিল না।

হাসপাতাল কর্তপক্ষ তাদের চিকিৎসায় বোর্ড গঠন করে। সামিরাকে বাঁচাতে প্রাণান্তর চেষ্টা করেও অজ্ঞান অবস্থায়ই ইহকাল ত্যাগ করেন তিনি।এদিকে, সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে হুছনারা বেগম ও বড় ছেলে সাদিকুল ইসলাম জানতে পারেন বাবা-ছেলের মৃত্যুর খবর। দুই প্রিয়জনদের হারানোর যন্ত্রণায় ব্যাকুল মা ছেলের জন্য আরেক দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছিল সামিরার মৃত্যু।স্থানীয়রা জানান, যুক্তরাজ্য থেকে গত ১২ জুলাই তারা দেশে আসেন। গত ১৮ জুলাই সিলেটের ওসমানীনগরের তাজপুরে ওই ফ্লাটের ২ তলার একটি ইউনিটে ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। মূলত ছেলের চিকিৎসার সুবিধার্থে বাসা ভাড়া করে তারা এখানে উঠেছিলেন।স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত ২৫ জুলাই রাতের খাবার শেষে প্রবাসী রফিক মিয়া তার স্ত্রী সন্তানসহ একটি কক্ষে এবং রফিকুল ইসলামের শশুর আনফর আলী, শাশুড়ি বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন, শ্যালকের স্ত্রী শোভা বেগম ও মেয়ে সাবিলা বেগম (৮) পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে বাসার সুস্থ স্বজনরা ডাকাডাকি করে প্রবাসী রফিকুল ইসলামসহ তার স্ত্রী-সন্তানরা ঘরের দরজা না খোলায় ৯৯৯ নম্বরে কল করেন।মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার হুলিয়ারবন্দ এলাকায় তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ঝলক পালের মালিকানা ভবনের ২য় তলার একটি ফ্লাট থেকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবারের ৫ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পুলিশ এসে বাসার দরজা ভেঙে তাদের অচেতন অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হতে পারে এমনটি ধারণা করলেও সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছাতে ভিসেরা প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ।

Advertisement