ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বুবলী বলেন, ‘কাল রাতে (বৃহস্পতিবার) আমি বাড়ি ফিরছিলাম। বলতে গেলে সতর্কভাবেই বাড়ি ফিরছিলাম, যেই বাড়ির রাস্তায় ঢুকেছি অমনি মনে হলো একটা থেমে থাকা গাড়ি আমার গাড়িকে আঘাত করার জন্য তীব্রবেগে ছুটে আসে। অবস্থা বুঝে আমার চালক কঠিনভাবে ব্রেক কষে ধরেন। জাস্ট ভাবতে পারছিলাম না কী হতে যাচ্ছিল। এর আগেও গাড়ি দিয়ে দুইবার একই ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। দুইদিন আগে একবার আর করোনার মহামারীর কিছুদিন আগে একবার। সেইম ঘটনাই ঘটেছিল। কাল রাতের ঘটনায় নিশ্চিত হলাম, যদিও আমি আগে থেকেই টের পাচ্ছিলাম।’
বুবলী বলেন, ‘বারবার আমার সঙ্গে এই ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি না কেন আমার সঙ্গে এরকমটা ঘটছে, তবে এতোটুকু বুঝতে পারছি কেউ আমাকে মারার চেষ্টা করছে। শুধু গাড়ি দিয়ে নয়, নানাভাবেই এই চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আপনার সঙ্গে যখন একটা ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে তখন আপনি ফিল করতে পারবেন। এর আগে আমি বাসায় চিন্তা করবে ভেবে বলি নি। কিন্তু কাল রাতে আমি বলতে বাধ্য হয়েছি- কেননা স্বাভাবিক থাকতে পারছিলাম না।’
বুবলী নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমি যদি আজ এটা না বলি- তাহলে দেখা গেল গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেলাম- সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বলে চালিয়ে দেওয়া হবে। এর পেছনে যে একটা সুক্ষ্ম ষড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত রয়েছে বা ছিল তা কেউ জানতে পারতো না। এ জন্য ভাবলাম বিষয়টা সকলকে জানানো দরকার। এজন্য ফেসবুকে লিখেছি। আমার সাথে যা ঘটেছে সেই অবস্থার বর্ণনা হয়তো আমি তুলে ধরতে পারি নি। কিন্তু ফেসবুকে যা লিখেছি তারচেয়েও কয়েকগুণ ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে আমার সঙ্গে।’
বুবলী শুক্রবার বিকেলে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সব সড়ক দুর্ঘটনাই দুর্ঘটনা নয়, অনেক সময় পরিকল্পিতও হয় তা গত দুদিন টের পেয়েছি। উপলব্ধি করেছি আমরা যা দেখি বা যা শুনি তার পেছনেও অন্য এক অজানা সত্য থাকে। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখলাম আর ভাবছিলাম আজকের দিনটি তো আমাকে নিয়ে অন্য রকম সংবাদও হতে পারতো। হয়তো আল্লাহর রহমত, মা বাবা ভাই বোনদের দোয়া আর আপনাদের ভালোবাসায় এ যাত্রায় ভালো আছি।’ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বুবলী বলেন, ‘গত চার-পাঁচদিন আমি “চোখ” নামে একটি সিনেমার শুটিং করছিলাম, যথারীতি শুটিং শেষে রাতে বাসায় ফেরার পথে বিপরীত রাস্তা থেকে কোনো হর্ন না বাজিয়ে, কোনো সিগনাল না দিয়ে আমার গাড়ির সামনে প্রচণ্ডে বেগে তেড়ে এসেছে একটি প্রাইভেট কার যার গ্লাস ছিল ব্ল্যাক পেপার দিয়ে মোড়ানো এবং কোনো নাম্বার প্লেট ছিলনা। আমার ড্রাইভার হার্ড ব্রেক না করলে হয়তো অন্য কিছু হতে পারতো। আর আমি নিজেও ড্রাইভিং জানি তাই কোনটি দুর্ঘটনা আর কোনটি ইচ্ছাকৃত তা বোঝার ক্ষমতা নিশ্চই একজন সুস্হ স্বাভাবিক মানুষের মতো আমারও আছে।
এই অভিনেত্রী ফেসবুক পোস্টে আরো বলেন, ‘প্রথম দিন সব বুঝতে পেরেও মনকে শান্তনা দিয়েছিলাম হয়তো বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ি এতো জোরে আসার কারণে কন্ট্রোল রাখতে পারেনি কিন্তু একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে তো সেটি আর বুঝতে বাকি থাকে না যে এটি উদ্দেশ্যমূলক ভাবেই করানো হচ্ছে। অনেক দিন ধরেই আমি নানান ভাবে নানান কিছু বুঝতে পারছি, শুনতে পারছি।’
আইনগত ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে বুবলী বলেন, ‘যারাই এসব ন্যাক্কার জনক অপরাধের সাথে জড়িত থাকবেন তারাও নিশ্চই বার বার সুযোগের অপেক্ষায় থাকবেন। কিন্তু মনে রাখবেন কেউই আইনের উর্ধ্বে নন, আর আল্লাহ তো একজন আছেন যিনি সবই দেখেন। শিগগির আমি ব্যবস্হা নিবো এ ব্যাপারে । দোআ করবেন আমার জন্য।’
বুবলী কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে জানালেন বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলাম, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে চুপ থাকাটা বোকামি। তাই থানায় ঘটনার বিবরণ দিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করবো।