সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের হয়ে যুদ্ধ করার দায়ে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত তিন ব্রিটিশ নাগরিকের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল হোম অফিস। কিন্তু হোম অফিসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিল কমিনশনে আপিল করে নাগরিকত্ব ফিরে পেয়েছেন এই তিন ব্রিটিশ বাংলাদেশী নাগরিক। ট্রাইব্যুনালে তাদের নাম পরিচয় প্রকাশ না করে সাংকেতিক নাম ব্যবহার করা হয়েছে।
গত মাসে অনুষ্ঠিত ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে বলা হয়েছে, তিন জনের মধ্যে সি-থ্রি এবং সি-ফোর মহিলা। তাদের জন্ম এবং বেড়ে উঠা ব্রিটেনে। ব্রিটেনের জাতীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ২০১৯ সালের নভেম্বরে তাদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করে হোম অফিস। তৃতীয়জন পুরুষ, সি-সেভেনের জন্ম বাংলাদেশে হলেও জন্মের পর থেকেই তিনি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পান। ২০২০ সালের মার্চে তার নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করেছিল হোম অফিস।
তিনজনই হোম অফিসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিশেষ ইমিগ্রেশন আপিল কমিশনে আপিল করেন। কমিশনের বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিচারপতি চ্যাম্বারলিন বলেছেন, যখন তাদের নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তখন তারা কেউই বাংলাদেশের নাগরিক নন, তারা শুধুমাত্র ব্রিটেনের নাগরিক এটা তারা ট্রাইব্যুনালে প্রমান করতে সক্ষম হয়েছেন। অর্থাৎ তখন হোম অফিসের সিদ্ধান্ত তাদেরকে মূলত রাস্ট্রহীন বানানো হয়। কাউকে রাস্ট্রহীন করার এখতিয়ার সেক্রেটারী অব স্টেইটের নেই বলেও মন্তব্য করেন বিচারক।
অবশ্য হোম অফিস বলেছে, যখন তাদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখন তিনজনেরই দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। সুতরাং তাদেরকে রাস্ট্রহীন করা হয়নি।
কিন্তু ট্রাইব্যুনালে এই তিন জনের আইনজীবি বলেছেন, তিন জনের বয়স বর্তমানে ২১ বছরের উপরে। ২১ বছর হওয়ার সাথে সাথে তাদের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চলে গেছে। তাই ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে তাদের রাস্ট্রহীন করা হয়েছে। তবে হোম অফিস ট্রাইব্যুনালের রায়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেছে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই তাদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়া উচিত হয়নি বলে মনে করছে হোম অফিস।
এদিকে এই তিন নাগরিকের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পাবার পর শামীমার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে শামীমা এখনো ২১ বছরের নীচে হওয়ায় দ্বৈত নাগরিকত্বের অংশ হিসেবে এখনো সে বাংলাদেশের নাগরিক বলে মনে করছে হোম অফিস। তাই এদের থেকে শামীমার মামলাটি একটু আলাদা বলে মনে করা হচ্ছে।