আজ ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস

আজ ১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস। ফারাক্কা বাঁধের ফলে নদীর নাব্যতা হারানোর আশঙ্কায় ও পানির নায্য হিসসার দাবিতে ১৯৭৬ সালের এই দিনে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়।রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দান থেকে ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখে লাখো জনতার সেই লংমার্চ রওনা হয় ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখে। লংমার্চ শেষে কানসাট হাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত বিশাল সমাবেশে বক্তব্য দেন মজলুম জননেতা। সেই থেকে ১৬ মে ফারাক্কা দিবস নামে পরিচিতি লাভ করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১৮ কিলোমিটার উজানে ভারত ফারাক্কা বাঁধটি নির্মাণ করে।১৯৭২ সালে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন গঠন করা হয়। এরপর ১৯৭৪-এর ১৬ মে একটি সমঝোতায় পৌঁছায় বাংলাদেশ ও ভারত। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় অবস্থিত ফারাক্কা ব্যারাজের নির্মাণকাজ ১৯৭৫ সালে শেষ করে দেশটি। ওই বছর থেকেই ব্যারাজের মাধ্যমে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে ভারত। ১৯৭৬ সাল থেকে একতরফাভাবে পানি নিজ দেশের অভ্যন্তরে ফিডার ক্যানাল দিয়ে প্রত্যাহার অব্যাহত রাখে ভারত। এর বিরূপ প্রভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা, মহানন্দাসহ দেশের বড় বড় সব নদী নাব্যতা হারিয়ে হয়ে পড়ে পানিশূন্য বালির চর।

ফারাক্কার প্রভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মাসহ চার নদীই এখন মৃতপ্রায়। স্থানীয়রা বলছেন, নদীতে এখন পানির প্রবাহ নির্ভর করে ভারতের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। শুষ্ক মৌসুমে পানি পাওয়া যায় না, আবার বর্ষায় হঠাৎ পানি ছেড়ে দিলে বন্যা এবং নদীভাঙন দেখা দেয়। পরিবেশবাদীরা বলছেন, নদী শুকিয়ে যাওয়ায় জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে।সেভ দ্য নেচারসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নেতারা জানান, পদ্মায় পানি না থাকায় পরিবেশের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উদ্ভিদ ও জীবচক্র।চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, ফারাক্কা ব্যারাজের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মাসহ অন্য তিন নদী- মহানন্দা, পাগলা ও পুনর্ভবা শুকিয়ে যাচ্ছে, ব্যারাজ নির্মাণের পর পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় নদীতে নাব্যসংকট দেখা দিয়েছে। এখন প্রয়োজনীয় পানি পেলেও তা ধরে রাখা যায় না। আর ফারাক্কা ব্যারাজের দরজা হঠাৎ খুলে দেওয়ার কারণে বন্যা ও নদীভাঙন প্রবণতা বাড়ছে।

Advertisement