ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: শনিবার রাতে ইথিওপিয়া থেকে ইরিত্রিয়ার রাজধানীতে কমপক্ষে তিনটি রকেট ছোড়া হয়েছে। আঞ্চলিক ৫ জন কূটনীতিককে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ফলে সেখানে হাজার হাজার মানুষ শরণার্থী হয়ে যাচ্ছেন। অনেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে যাচ্ছেন সুদানে। এর ফলে পুরো অঞ্চল অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, উত্তরের টাইগ্রে অঞ্চলে ইথিওপিয়ান সরকারের সেনাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী বাহিনীর লড়াই তীব্র হয়েছে। এরই মধ্যে ওই এলাকায় যুদ্ধের মধ্যে আটকে পড়া বাংলাদেশি ১০৪ গার্মেন্ট শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। ডিবিএল কোম্পানিতে কাজ করতেন তারা।
কারখানায় বোমা হামলা হওয়ার পর উদ্ধারে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ জব্বার। তিনজন কূটনীতিক বলছেন, শনিবার রাতে নিক্ষেপ করা কমপক্ষে দুটি রকেট আঘাত হেনেছে আসমারা বিমানবন্দরে। টাইগ্রে এবং ইরিত্রিয়ায় বেশির ভাগ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য পেতে উভয় পক্ষের কারো নাগাল পাওয়া যায় নি। টাইগ্রে’র নেতা দেব্রেটসিয়ন গেব্রেমাইকেল মঙ্গলবার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের সরকারকে সমর্থন দিতে সীমান্ত অতিক্রম করে সেনাদের পাঠিয়েছে ইরিত্রিয়া। তবে এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি। ইরিত্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওসমান সালেহ মোহাম্মদ এ রিপোর্টের সত্যতা অস্বীকার করেছেন। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, আমরা যুদ্ধের কোনো অংশ নই।
উল্লেখ্য, দুই বছর আগে একটি শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল ইরিত্রিয়া এবং ইথিওপিয়া। কিন্তু ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত যুদ্ধে তাদের বিধ্বংসী ভূমিকার পরে টাইগ্রের নেতাদের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক মনোভব অব্যাহত রাখে আসমারায় প্রেসিডেন্ট ইসাইস আফওয়েরকি’র সরকার। শনিবার দিনের শুরুতে টাইগ্রে’র ক্ষমতাসীন দল টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ) ইরিত্রিয়ানদের টার্গেট করার হুমকি দেয়। দলের মুখপাত্র গেটাচিউ রেডা স্থানীয় এক টেলিভিশন স্টেশনকে বলেন, আসমারা এবং মাসাওয়া থেকে আসা যেকোনো সামরিক অভিযানকে ভ-ুল করে দিতে আমরা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাবো। উল্লেখ্য, মাসাওয়া হলো লোহিত সাগরে ইরিত্রিয়ান সমুদ্রবন্দর।
গত সপ্তাহে টাইগ্রে’র নেতাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেন আবি। ইরিত্রিয়া এবং সুদান সীমান্তের কাছে অবস্থানরত কেন্দ্রীয় সেনাদের বিরুদ্ধে তারা হামলা চালিয়েছে, এই অভিযোগে ওই সামরিক অভিযান শুরু করেন আবি। এ লড়াইয়ে এরই মধ্যে শত শত মানুষ মারা গেছেন উভয় পক্ষে। হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সুদানে। এর ফলে ইথিওপিয়ার অন্যান্য অংশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। একই অবস্থা দেখা দিতে পারে হর্ন অব আফ্রিকা বলে পরিচিত অঞ্চলে। হামদায়েত সীমান্ত দিয়ে সুদানে পাড়ি দেয়া বেশ কিছু শরণার্থী কথা বলেছেন রয়টার্সের সঙ্গে। তারা বলেছেন, ইরিত্রিয়া থেকে ইথিওপিয়ায় তাদের এলাকায় গোলা ছোড়া হয়েছে।