রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও ) মোহাম্মদ রাসেলের বাসায় অভিযান চালাচ্ছে র্যাব। বৃহস্পতিবার বিকেলে তার বাসায় এ অভিযান শুরু হয়।এর আগে, মোহাম্মদ রাসেল ও ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলার আবেদন করেন আরিফ বাকের নামে এক ভুক্তভোগী।বুধবার রাত ১২টার দিকে দিকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন জমা দেন ওই ভুক্তভোগী। বৃহস্পতিবার অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুলশান থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিন্দ্য। এর প্রেক্ষিতে তার বাসায় অভিযান শুরু হয়েছে।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে আরিফ বাকের ও তার কয়েকজন বন্ধু চলতি বছরের মে ও জুন মাসে কিছু পণ্য অর্ডার করেন। সকল পণ্যের জন্য নির্ধারিত টাকাও পরিশোধ করেন তারা। তবে ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি করার কথা থাকলেও দিনের পর দিন পার হয়ে গেলেও পণ্য বুঝিয়ে দেয়নি ইভ্যালি। পরবর্তীতে গত ৯ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসে পণ্যে চাইতে গেলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ভুক্তভোগীকে পণ্য বুঝিয়ে না দিয়ে বরং ভয়-ভীতি দেখান।গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) নাসরিন ও রাসেলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেয়। এছাড়া, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত কমিটি।এর আগে ১৩ আগস্ট ইভ্যালিকে চিঠি দিয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত কোম্পানির সম্পদ ও দায়ের বিবরণ, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দেনার বিবরণ জানতে চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
তবে সময় চেয়ে আবেদন করে ইভ্যালি। তবে সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ২৬ আগস্ট দেওয়া হিসেবে ইভ্যালি জানিয়েছিল, গ্রাহকরা তাদের কাছে ৩১১ কোটি টাকা পাবেন।গ্রাহকের পাওনার সমপরিমাণ টাকা পণ্য কেনার জন্য অগ্রিম মূল্য বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে। এর আগে ১৯ আগস্ট ইভ্যালি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তাদের এই দায় ও সম্পদের তথ্য দেয়। ওই সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।এ সময় তিনি বলেছিলেন, ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। হাফিজুর রহমান আরো বলেন, ইভ্যালি তাদের সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছে ১০৫ কোটি।কোম্পানির ব্র্যান্ড ভ্যালু দেখিয়েছে ৪২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সেভাবেই তারা তাদের ব্যালেন্স শিট মিলিয়েছে।জানা গেছে, ইভ্যালির ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার দেনার বিপরীতে ব্র্যান্ড ভ্যালু দেখানো হয়েছে ৪২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা।অদৃশ্য সম্পদ দেখানো হয় ১৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং দৃশ্যমান সম্পদের হিসাব দেখানো হয়েছে ১০৫ কোটি ৫৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা।