জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন একুশের অমর গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরীকে গতকাল (বৃহস্পতিবার) মুজিববর্ষ বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেছে।
বাংলাদেশে অমর একুশের সূচনা লগ্নে ফুলেল শুভেচ্ছাসহ আবদুল গাফফার চৌধুরীর হাতে এই বিশেষ সম্মাননার ক্রেস্ট তুলে দেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম।
বাংলাদেশ সময় রাত ১২:০১ মিনিটে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পক্ষ থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করার সাথে সাথে লন্ডন মিশনে মান্যবর হাইকমিশনার, বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং মিশনের কর্মকর্তারাও আবদুল গাফফার চৌধুরীর পাশে দাঁড়িয়ে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো‘ গানটিতে কন্ঠ মিলিয়ে জাতির পিতা ও অমর একুশের মহান ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডনের এই আয়োজন ছিল অভূতপূর্ব ও ব্যতিক্রমধর্মী।
সম্মাননা দেয়ার পর আবদুল গাফফার চৌধুরী আবেগ আপ্লুত কন্ঠে এ ধরনের আয়োজনের জন্য হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমসহ লন্ডন মিশনের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “আমাকে বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন যে সম্মান দিয়েছে, তা অভূতপূর্ব। আমি এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ধন্যবাদ জানাই, কারণ তাঁরই সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশে ও দেশের বাইরে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে আজ মহান একুশে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘদিন বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতীয়তাবদের আদর্শ থেকে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষকে সুকৌশলে ভুল পথে পরিচালিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে।
সেই বিভ্রান্তির কবল থেকে দেশ ও জাতি আজ মুক্ত। বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির উন্নয়নে যে দিক-নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, সেই দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আজ বিশ্বের দরবারে এক মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। আমি আশা করি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলায়’ পরিণত হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি বাংলা ভাষা ও মহান একুশের অমর গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরীকে মুজিববর্ষে বিশেষ সম্মাননা দিতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।
তিনি বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী শুধু বাঙালি জাতির নয়, বিশ্বের সব বাংলা ভাষাভাষীর গর্ব। যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের তিনি বাতিঘর। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের বাংলা সাংবাদিকতায়, সাহিত্যে এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে সুচিন্তিত ও গবেষণামূলক লেখায় তাঁর অবদান অপরিসীম।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটির প্রতিনিধি সুলতান মাহমুদ শরীফসহ আবদুল গাফফার চৌধুরীর ঘনিষ্ট ব্যক্তিত্বরা স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন।প্রেস বিজ্ঞপ্তি