ব্রিটবাংলা ডেস্ক : প্রায় আড়াই মাসের লকডাউন শেষে মধ্য জুন থেকে ব্রিটেনের সব ধরনের ব্যবসা পুনরায় চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে বিশ্বব্যাপি মহামারি করোনার নেতিবাচক প্রভাব এরিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে ব্রিটেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
করোনা মহামারির প্রভাবে ব্রিটেনে অন্তত ২০ হাজার ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেও সতর্ক করেছে দ্যা সেন্টার ফর রিটেইল রিসার্চ। এ কারেন হাইস্ট্রীট ব্যবসা থেকে মিলিয়নের বেশি মানুষ চাকরীচ্যুত হতে পারেনন বলেও সতর্ক করা হয়েছে। লকডাউনের পর অনেক নামি-দামি ব্র্যান্ডকে হয়তো আর নাও দেখা যেতে পারে ব্রিটেনের হাইস্ট্রীটে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কথা নিচে উল্লেখ করা হল।
ব্রিটেনে করোনা ভাইরাসের প্রথম শিকার হয়েছে ল্যুরা অ্যাশলি নামের এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি। করোনার প্রভাবে ব্রিটেনে অন্তত ৭০টি শাখা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে অ্যাশলি। এতে চাকরীচ্যুত হবেন প্রায় ৭২১ জন মানুষ। তবে বাকী ৭৭টি শাখার মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা করবে এই ফ্যাশন চেইন। তারপরেও করোনা প্রভাব কাটিয়ে উঠতে হলে জরুরী ভিত্তিতে অন্তত ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড নগদ অর্থ সাহায্যর প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ল্যুরা অ্যাশলি।
ব্রিটেনের সর্বাধিক পরিচিত ব্র্যান্ড হল ডেবেনহ্যামস। এই রিটেইল প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের ভেতরে দুবার এডমিনিস্ট্রেশনে গেছে। সর্বশেষ গত এপ্রিলে করোনা লকডাউন শুরুর প্রায় দু সপ্তাহ আগে এডমিনিস্ট্রেশনে গেছে। তবে করোনা লকডাউনের পরে ১২৪ টি শাখার মধ্যে ১২০টি শাখা নতুন মালিকের হাত ধরে পথ চলা শুরু করতে পারে। অন্তত ১৫টি শাখা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডেবেনহ্যাম গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসায়িক সংকট মোকাবিলা করে আসছে।
ব্রিটেনের আরেক জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার কোম্পানী কাথ কিডস্টোনের ৬০টি শাখার মধ্যে সবকটি শাখাই গত এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে। লকডাউনের পর শাখাগুলো আর খোলা হবে না। এতে অন্তত ৯শ মানুষ চাকরী হারাবেন।
রেস্টুরেন্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চীকিটো মার্চ থেকে এডমিনিস্ট্রেশনে রয়েছে। ওয়াগা মামা এবং ফ্র্যাঙ্কি এন্ড বানিসও চীকিটোর মালিকানাধীন। লন্ডনে রেস্টুরেন্ট, পাব এবং পেট্রল স্টেশনসহ এই কোম্পানির মালিকানাধীন অন্তত ৬০টি শাখা বন্ধ থাকবে লকডাউনের পরেও। আর লকডাউনের পরে এডমিনিস্ট্রেশনের অধিনে বাকী ২০টি শাখা চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। চীকিটোর শাখাগুলো পুরোপুরি বন্ধ হলে অন্তত ১৫ হাজারের বেশি চাকুরী ঝুঁকিতে পড়বে।
৩০ শে মে থেকে এডমিনিস্ট্রেশনে যাবে রেন্ট সেক্টরের বিশাল প্রতিষ্ঠান ব্রাইটহাউস। পুরো ইউকেজুরে এই প্রতিষ্ঠানের প্রায় দু’শ হাজার গ্রাহক রয়েছে। শাখা রয়েছে ২৪০টি। এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হলে চাকুরী হারাতে পারেন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। ব্রাইটহাউস এডমিনিস্ট্রেশনে গেলেও চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রতিটি কাস্টমারকে সেবা নিশ্চিত করা বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি।
ওয়েসিস এন্ড ওয়ারহাউস এডমিনিস্ট্রেশনে গেছে করোনা লকডাউন শুরুর প্রায় তিন সপ্তাহ আগে। নতুন মালিকের সন্ধান মেলেনি। তাই এ দুটি প্রতিষ্ঠান লকডাউনের পর ব্যবসায় ফিরে আসার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। ওয়েসিস এন্ড ওয়ারহাউসের ৯২টি শাখা রয়েছে ব্রিটেনে। এছাড়াও বিশেষ মুল্যহ্রাসে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ও রিটেইল শপের অন্তত ৪৩৭টি জায়গায় ওয়েসিস এন্ড ওয়ারহাউসের বস্ত্র বিক্রি হয়। ওয়েসিস এন্ড ওয়ারহাউস ফিরে না এলে ১৮শ তিন জনের চাকুরী যাবে।
ইতালিয়ান রেস্টুরেন্ট চেইন কার্লুচিও’স অবশ্য নতুন মালিকের সন্ধান পেয়েছে। লকডাউনের পর নতুন মালিকের অধিনে এর ৩০ শাখা খোলা হবে। তবে নতুন মালিকের অধিনে গিয়ে অন্তত ১ হাজার পুরনো স্টাফ তাদের চাকুরী হারাতে পারেন।