কুমিল্লা সিটির নির্বাচনে কোনো বিপর্যয় দেখিনি: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কোনো বিপর্যয় দেখিনি।সোমবার (২০ জুন) বেলা ১১টায় কুসিক নির্বাচন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।সিইসি বলেন, “আমরা রাত ৮টা পর্যন্ত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। কোনো বিপর্যয় দেখিনি। সিসিটিভি’র মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি দেখছিলাম। একটা ফোনে ফলাফল পাল্টে গেলো এমন কথা শোনা যাচ্ছে। শেষ মুহূর্তে একটা ফোনে বক্তব্য পাল্টে যায় এটা একেবারেই অসম্ভব। একটা বা দুইটা টেলিফোন আমি নিজেও করেছিলাম। রিটার্নিং অফিসার আমাকে খুব বিমর্ষ অবস্থায় ফোন করে বললেন, ‘স্যার, আমি বিপদে পড়েছি’। আমি সেখানে প্রচন্ড শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। ভাবলাম তাকে মারধর করা হচ্ছে।”

সিইসি বলেন, “এরপর আমি ডিসি-এসপিকে ফোন করেছিলাম। তারা তখন জানালেন তাৎক্ষণিক বিষয়টি দেখছেন। এরপর রিটার্নিং অফিসারকে বললাম সমস্যা হবে না। পরে তিনি জানালেন পুলিশ এসেছে মানুষ সরিয়ে দিয়েছে। বিচ্ছৃঙ্খল ঘটনা মাত্র ১৫ মিনিট ছিল। কোনোভাবেই ২০ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি। এরপর রিটার্নিং অফিসার স্বাচ্ছন্দ্যে ফল ঘোষণা করলেন সেটা আমরা দেখেছি।তিনি বলেন, “একটা ফোনে ফল পাল্টে গেলো এটা- একজন বলার পর হাজার মানুষ তাই বললো। আসলে আমাদের দেশের কালচারই এটা, এটা একটা গুজব। মেশিনের ফল অথবা হাতের রেজাল্ট আমরা ওয়েবসাইটে তুলে দিয়েছি। এমন ঘটনা ঘটেনি।ফল প্রকাশের সময় মিছিল হওয়ার বিষয়ে সিইসি বলেন, “মানুষের আবেগ উচ্ছ্বাসের কারণে মিছিল হয়েছে। এটা আমাদের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত, কিন্তু তাদের কাছে কাঙ্ক্ষিত। তারা উচ্ছ্বাসের কারণেই এটা করেছেন।”কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি, বিনীত অনুরোধ করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা বাহাউদ্দিনকে প্রকাশ্যে প্রচারণায় অংশ নিতে দেখিনি। কিন্তু কেউ কেউ বলছেন উনি কৌশলে অংশ নিয়েছেন। আমাদের একটা প্রত্যাশা ছিল উনাকে যদি অনুরোধ করি তাহলে আর কথা উঠবে না। নির্বাচন কমিশন কাউকে এলাকা ত্যাগ করার আদেশ দিতে পারে না।”

সিইসি বলেন, “আচরণবিধি অনুযায়ী উনি অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাতে সন্দেহ নেই। আমরা তাকে এলাকা ত্যাগ করার আদেশ করিনি। তাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করেছিলাম, সেই চিঠি আছে। কিন্তু চারদিকে ছড়িয়ে গেলো আদেশ করার পরও তিনি প্রতিপালন করতে পারলেন না। এ কথা পুরোপুরি সত্য নয়। সংসদ সদস্য কেন, কোনো সাধারণ মানুষকেও এলাকা ত্যাগ করার আদেশ দিতে পারে না নির্বাচন কমিশন।তিনি বলেন, “এর আগে বলা হয়েছিল একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী গিয়েছিলেন তাকে এক ঘণ্টার মধ্যে এলাকা ত্যাগ করাতে পেরেছিলাম। সেটা ভিন্ন কথা। সেই মন্ত্রী ছিলেন বহিরাগত। আর বাহাউদ্দিনের তো ওটা স্থায়ী ঠিকানা। একজন মানুষ তার বাড়িতে থাকতে পারবে না তা তো নয়। হয়তো উনি ডিস্টার্ব করছেন বা কৌশলে প্রচারণা চালিয়েছেন। সেজন্য তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল। আমরা আইনকানুন দেখে চিঠি দিয়েছিলাম।কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “বাহাউদ্দিন সাহেব কোনো আইন ভঙ্গ করেননি। অভিযোগ আসছিল তিনি গোপনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাই তাকে অনুরোধ করেছি। তবে উনি চলে গেলে হয়তো ভালো হতো।”মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান, মো. আলমগীর ও ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement