বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয় এসেছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ছয়টি দেশের রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।আনিসুল হক বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খালেদা জিয়ার ভাই একটা আবেদন করেছেন তার শর্তযুক্ত মুক্তির মেয়াদ আরো বাড়ানোর জন্য। সেই ফাইলটা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এসেছে। আমার কাছে এখনো আসেনি।আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর ফাইলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এছাড়া মুক্তির মেয়াদও ছয় মাস বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে- এমন খবরের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এই ব্যাপারে যে তথ্য এখন টেলিভিশনের স্ক্রলে দেয়া হচ্ছে তা অসত্য।খালেদা জিয়া শর্তসাপেক্ষে বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে এখনো আবেদন আসেনি। ফাইলের মধ্যে কী আছে আমি সেটা বলতে পারব না। আবেদন এলে আমি সেটা নিষ্পত্তি করব।
আনিসুল হক বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অভিমত দেয়া ছাড়া আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে ফাইলটা পাঠানো হয়েছে। যখন আমার কাছে আসবে, আমি এটা নিষ্পত্তি করতে পারব তখন অবশ্যই আপনাদের জানাব।খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামিন দেয়ার এখতিয়ার কিন্তু আদালতের, সরকারের না। আমি যেটা মনে করি, যে শর্ত আছে সেই শর্তই থাকবে। এটাই আমার বিশ্বাস।২০২০ সালের ২৫ মার্চ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’র ধারা-৪০১ (১)-এর ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ওইদিনই হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি। একই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়। এরপর গত প্রায় তিন বছরে দফায় দফায় বাড়ে মুক্তির মেয়াদ।৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া প্রায় তিন বছর ধরে গুলশানে নিজ বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়।ওই বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে আরো পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার সাত বছরের সাজা হয়।