কে এই জিনা মিলার

ব্রিটবাংলা ডেস্ক : জিনা মিলার। এই মুহুর্তে বৃটেনের সব চাইতে আলোচিত মহিলা। আদালতে আইনী লড়াইয়ে এই টোরি সরকারকে দুই দুইবার পরাজিত করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেন্জ করেছিলেন তিনি। যদিও তাকে সমর্থন করে আদালতে আইনজীবি পাঠিয়েছিলেন কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্যার জন মেজর। একই সঙ্গে লেবারের শেডো এ্যাটর্নি জেনারেল শামি চক্রবর্তীও তাকে সহযোগিতা করেছেন।

তাদের এই চ্যালেন্জের ফলেই মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ১১জন বিচারপতি পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে রায় দিয়েছেন। এই রায়ের ফলে আবারো আলোচনায় আসেন জিনা মিলার।

এর আগে ২০১৬ সালে রেফারেন্ডামের পর ব্রেক্সিটের জন্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরিজা মে’র সরকার যখন আর্টিক্যাল ফিফটি ট্রিগার করবে অর্থাৎ সরকার যখন ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করতে যাবে তখন প্রথম আদালতের স্মরনাপন্ন হয়েছিলেন জিনা মিলার।

তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালের জানুয়ারীতে রুল জারি করেছিল, পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়া সরকার আর্টিক্যাল ফিফটি ট্রিগার করতে পারবে না। আর তাতেই মুলত সরকারের একক সিদ্ধান্তের ব্রেক্সিট আটকে যায়। আর এরপর থেকে ব্রেক্সিট সমর্থকদের কাছে ঘৃনার পাত্রে পরিনত হন তিনি। ব্রিটবি

কট্রর ব্রেক্সিট সমর্থকরা জিনা মিলারকে হত্যার হুমকিসহ বিভিন্নভাবে হয়রানী করতে থাকে। তাকে হুমকি দেওয়ার কারণে জানুয়ারী মাসেই অন্তত আটটি  রিপোর্ট করা হয় পুলিশে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে আদালত রদ্রি ফিলিপস নামে এক ব্যক্তিকে ১২ সপ্তাহের জেল দেয়। তিনি জিনা মিলারকে বর্ণবাদী আক্রমণের পাশাপাশি কেউ জিনা মিলারকে হত্যা করতে পারলে আর্থিক পুরস্কার দিবেন বলেও ঘোষনা দিয়েছিলেন।

এই হুমকির পর থেকে অবশ্য জিনা মিলারের বাড়িতে কঠোর নিরাপত্তার পাশাপাশি নিজেও সিকিউরিটি নিয়ে চলাফেরা করতে শুরু করেন। একই সঙ্গে জনসম্মুখে তার চলাফেরা গোপন রাখা হয়।

জিনা মিলার একজন উদ্যোক্তা। ভারতীয় বংশোদভূত পরিবারের মেয়ে। জন্ম হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গোয়ানায়। তখন সেটা ছিল ব্রিটিশ কলোনি অর্থাৎ ব্রিটিশ গোয়ানা। তার বাব ছিলেন ব্যারিস্টার। পরবর্তীতে এ্যাটর্নি জেনারেল হয়েছিলেন।

জিনা ১১ বছর বয়স থেকে ইংল্যান্ডের আসেন। সাসেক্সে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি শেষ করে পড়েছেন ইস্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে। এখানে আইন বিষয় শেষ করে নর্থ লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে পড়েছেন মার্কেটিং বিষয়ে।

তিনি বর্তমানে অনলাইন ওয়েলাখ ম্যানেজার এসসিএম ডাইরেক্ট পরিচালনার পাশাপাশি ট্রু এন্ড ফেয়ার ফাউন্ডেশন নামে একটি চ্যারিটি সংস্থাও পরিচালনা করেন তিনি।

২০১৭ সালে জিনা মিলার ইউকের মোস্ট ইনফ্লোয়েন্সিয়াল ব্ল্যাক পার্সনের খ্যাতি পান। এছাড়া একই বছর অত্যন্ত প্রভাবশালী এশিয়ান মহিলা হিসেবে দ্যা এশিয়ান পাওয়ার তালিকায় ২৬ নম্বর স্থান দখল করেন।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি বেক্সিটে বিশৃঙ্খলা বন্ধের জন্য ক্যাম্পেইন শুর করেন। জিনা মিলারের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সন্তান রয়েছে। তিনি দীর্ঘ দিন যাবত একক অভিভাবক হিসেবে ব্যবসার পাশাপাশি সন্তানকে লালন পালন করছেন।

 

Advertisement