ট্রাম্পকে ছাড়াই জলবায়ুর বিরুদ্ধে লড়বে কংগ্রেস

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে বৈশ্বিক বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ট্রাম্পকে ছাড়াই জলবায়ুর ঝুঁকি নিরসনে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে কংগ্রেস।

মাদ্রিদের জলবায়ু সম্মেলনে সোমবার মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল এ ঘোষণা দিয়েছে। পেলোসি বলেন, ‘জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় কংগ্রেসের পদক্ষেপ লৌহবর্মের মতো শক্ত।

এটি জনগণের স্বাস্থ্য, নির্মল বায়ু, স্বচ্চ পানি, আমাদের শিশু, অর্থনীতির সুরক্ষা, বিশ্বের সম্মৃদ্ধি, জাতীয় নিরাপত্তা, বিচার ও সমতার বিষয়। আমরা কার্বন নিঃসরণে আমাদের সেরাটাই দিতে প্রস্তুত।’

২০১৫ সালের স্বাক্ষরিত ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ চুক্তিতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্বন নিঃসরণ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে সম্মত হয় পক্ষগুলো।

বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কপ-২৫ সম্মেলনে যোগ দেননি। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, ‘বিশ্বের বড় বড় কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর অবহেলার কারণেই জলবায়ু এমন খারাপ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে, যেখান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব হয়ে পড়বে।’

তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীনের কাছ থেকে আরও বেশি পদক্ষেপ চান। ২০১৩ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমাতে ইউরোপের পরিকল্পনার প্রশংসা করেন গুতেরেস। একই সঙ্গে বলেন, এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় চীন, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশকে এগিয়ে আসতে হবে।

গ্রিনল্যান্ডের বরফ চাঁইয়ে ফাটল : বরফাচ্ছাদিত বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের বরফ চাদরে ফাটল ধরেছে। বরফের বড় বড় চাঁই গলে নালা ও হ্রদ তৈরি হয়েছে। ড্রোন উড়িয়ে প্রকৃতির জন্য বিপজ্জনক এ চিত্র পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অতি উষ্ণায়নের কারণে বরফ গলে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। এএফপি জানায়, সাধারণত বরফ চাদরের পুরুত্ব হয় প্রায় এক কিলোমিটার। গ্রীষ্মকালে স্বাভাবিকভাবে এর উপরিভাগ গলে হাজার হাজার নালা তৈরি হয়।

বহু নালা মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এক কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত বরফের গোড়ায় বিশাল খোলা জায়গা তৈরি করে। পৃষ্ঠের স্রোতগুলো থেকে তুষার গলে নিচে প্রবাহিত হতে থাকে। অবশেষে বিশ্বের বড় বড় জলপ্রপাত তৈরি করে।

পুরো এ প্রক্রিয়া সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা খুবই কঠিন। কিন্তু ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজের স্কট পোলার ইন্সটিটিউটের একদল হিমবাহ বিশেষজ্ঞের এ প্রক্রিয়া দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। তারা গত বছরের জুলাই মাসে গ্রিনল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সঞ্চিত হিমবাহে পৌঁছায়। তাদের সেখানে পৌঁছানোর কয়েক দিন পর প্রতি পাঁচ ঘণ্টায় দুই-তৃতীয়াংশ নালা অথবা ৫০ লাখ লিটার পানি ফাটল বেয়ে গলে হারিয়ে গেছে। ড্রোনের পাঠানো ছবিতে এমন চিত্র দেখা গেছে।

প্রসেসিং অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসে প্রকাশিত গবেষণার সহকারী লেখক টম চুডলি এএফপিকে বলেন, ‘ড্রোন যেটি করতে পারে তা হল যেসব অঞ্চলগুলোতে বিজ্ঞানীরা প্রবেশ করতে পারেন না, সেগুলোতে এ ধরনের উচ্চমানের পরিমাপে সাহায্য করে।’

অন-বোর্ড জিপিএস ব্যবহার করে দলটি ভূস্থান নির্দেশ এবং হাজার হাজার ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছিল, যা বরফ চাদরের উপরিতলের থ্রিডি কাঠামো তৈরিতে সাহায্য করেছে।

হিমবাহ হল বরফের নদী, যা নিজের ওজনের নিয়ন্ত্রণে ধীরে ধীরে সমুদ্রের দিকে চলে। এটি যখন সমুদ্রের কাছে পৌঁছায় তখন এটি বরফ খণ্ডে বিভক্ত হয়ে যায়। এটি সমুদ্রের স্তর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গ্রিনল্যান্ডের অবদানের প্রায় ৪০ শতাংশ উপস্থাপন করে (বাকি অংশ হিমবাহের প্রকৃত গলানো থেকে)।

Advertisement