বিশেষ প্রতিনিধি : বিলেতে নির্মিত মৌলিক গান ‘যত দূরে যাই’- এর রচনার জন্য বেষ্ট লিরিসিষ্ট ২০১৮ ইষ্টউড এওয়ার্ড পেলেন ড: জাকি রিজওয়ানা আনোয়ার। গত বছর বেষ্ট ফিমেল নিউজ কাষ্টার হিসাবে ইষ্টউড এওয়ার্ড পেয়েছিলেন তিনি।উল্লেখ্য পেশাগত, মিডিয়া ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান রাখার জন্য বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ড: জাকি রিজ্ওয়ানা আনোয়ার বিলেতে বাঙালিদের কাছে একটি শ্রদ্ধাভাজন নাম।
ড: জাকি রিজওয়ানা আনোয়ারের বাংলাদেশ টেলিভিশনে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় পর পর পাঁচবার দলনেত্রী হিসেবে শ্রেষ্ঠ বক্তা হওয়ার সময় থেকেই সংবাদ পাঠের যাত্রা শুরু। প্রথমে ঢাকা বেতার, তারপর একে একে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস, বিলেতের প্রথম বাংলা টিভি ও সবশেষে চ্যানেল এস-এর তিনি বহু বছর ধরেই একজন বলিষ্ঠ এবং জনপ্রিয় সংবাদ পাঠিকা। বাংলাদেশে ইন্সটিটিউট অব ম্যাস কমিউনিকেশন থেকে তিনি সংবাদ পরিবেশন ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে লং কোর্সে সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হন। বাংলাদেশ ও বিলেতের টিভিগুলো ছাড়াও অল ইন্ডিয়া রেডিও ও ভয়েস অব আমেরিকায় বিভিন্ন সময়ে তার সাক্ষাৎকার গ্রহন করা হয়েছে। ব্রিটবাংলার পাতায়ও সমসায়মিক বিষয় নিয়ে তিনি নিয়মিত কলাম লিখেন। নীচে লিঙ্ক দেওয়া হল..
https://britbangla24.com/news/36629
https://britbangla24.com/news/28055
দারুণ মেধাবী কমনওয়েলথ স্কলার শিশু বিশেষজ্ঞ ড: জাকি পন্চম শ্রেণী থেকে শুরু কোরে বিলেতে উচ্চতর ডিগ্রী – সবই করেছেন মেধা ভিত্তিক বৃত্তি নিয়ে। ঢাকা থেকে এম বি বি এস পাশ করার পর পরই তিনি বৃটিশ কাউন্সিলের স্কলারশিপে বিলেতে ডিপ্লোমা ইন ট্রপিক্যাল মেডিসিন এন্ড হাইজিন করেন। তারপর ‘ড্যানিডা’-এর স্কলারশিপে মাদার এন্ড চাইল্ড হেল্থে মাষ্টার্স করেন। সবশেষে কমনওয়েলথ স্কলারশিপে ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ড হেল্থে পি এইচ ডি করেন। বিলেতের ইন্সটিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ ও বাংলাদেশের আই সি ডি ডি আর বি-এর সহযোগিতায় এবং গ্ল্যাক্সো এন্ড স্মীথের (তখন বারোস ওয়েলকাম ট্রাস্ট হিসাবে পরিচিত) গ্রেন্টে টাঙ্গাইলের পঞ্চাশটি গ্রামে তিনি আয়োডিনের অভাবজনিত রোগে ভোগা গর্ভবতী মা ও শিশুদের উপর গবেষণা করেন যা বি বি সি – টু তে প্রখ্যাত সংবাদ পাঠক মাইকেল বার্কের ধারা বর্ণণায় ‘দ্যা রেইন প্লেগ’ নামে একটি ডকুমেন্টারিতে প্রচারিত হয়।
এছাড়া ‘এ্যাকশন ফর সেইফ মাদারহুড, ইউকে’ -এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে তিনি ব্রাজিলে ম্যাটারনাল মর্টালিটি (মাতৃমৃত্যু) ও গ্যাম্বিয়াতে ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশনের (এফ জি এম) উপর কাজ করেছেন। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে এবং ‘ল্যন্সেট’ ও ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রশনে তিনি তার কাজের উপাত্ত তুলে ধরেছেন।
ব্যস্ত জীবনের মধ্যেও বাংলাদেশে এবং বিলেতে ড: জাকি রিজওয়ানা আনোয়ার নানা ধরনের সমাজসেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের উইমেন এন্ড কালচারাল সেক্রেটারি হিসাবে তিনি ইউকের বিভিন্ন স্থানে ‘হার্ড টু রিচ’ মহিলাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। প্রবাসে বাঙালিদের নানা সমস্যায় তাকে পাওয়া যায়। প্রবাসী বাংলাদেশীদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রথম যে দু/তিনজন কার্যক্রম শুরু করেন, তিনি তাদেরই একজন এবং বাংলাদেশে গিয়ে আইনমন্ত্রীর সাথেও এ ব্যাপারে তিনি আলোচনা কোরে এসেছেন। বেশ কয়েকটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে তিনি বহুদিন ধরে সাহায্য সহযোগিতা কোরে আসছেন যেমন, সি আর পি ও শ্রীপুর শিশুপল্লী। তাছাড়া বিলেত ভিত্তিক ‘মানুষ মানুষের জন্য’ এবং ইকরা ইন্টারন্যাশনাল, জালালাবাদ বিধবা প্রজেক্টেও তিনি সহযোগিতা করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশে বিশেষ করে মেধাবী ও দরিদ্র কন্যা শীশুদের বৃত্তি দিয়ে আসছেন।
ড: জাকি ওস্তাদ আখতার সাদমানীর কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নেন এবং পরে অজিত রায়ের কাছে রবীন্দ্র সঙ্গীত শিখেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘নতুন কুঁড়ি’ অনুষ্ঠানে কয়েকবার বিজয়ী হলেও বিলেতে অনুষ্ঠানে খুব কমই তিনি গান করেন । তবে তার মেয়েকে তিনি বাড়ীতে গান শেখান। তার মেয়ে প্রপা রিজ্ওয়ানা আনোয়ার তার লিখা ‘যত দুরে যাই’ গানটিতে সুরারোপ করার জন্য এবং মিউজিক নির্দেশণার জন্য বেষ্ট মিউজিক ডাইরক্টর ইষ্টউড এওয়ার্ড অর্জন কোরেছে। প্রপার ভাই প্রমিত আনোয়ার এই গানটিতে বেহালা বাজিয়েছে। তাদের পারিবারিক প্রচেষ্টায় প্রবাসে থেকে দেশের প্রতি মমত্ববোধ থেকে তৈরী ‘যত দুরে যাই’ গানটি এখন সকলের ভালবাসা পেয়ে বহুদুর এগিয়ে গেছে।