ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: নিষ্পাপ শিশু ফারিয়া আক্তার দোলা (৫) ও নুসরাত জাহানকে (সাড়ে ৪ বছর) লিপস্টিক দিয়ে সাজানোর লোভ দেখিয়ে কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ শেষে হত্যার অভিযোগে দুই পাষণ্ডকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে শিশুদের পিতামাতা ও স্বজনরা। আজ মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতদন দমন ট্রাইব্যুনাল ৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার রায় দেন।
উচ্চ আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে দ্রুত রায় কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। শিশু দুটির পরিবার ওই অর্থ সমহারে পাবে বলে রায়ের আদেশে বলা হয়েছে।
এর আগে আসামি গোলাম মোস্তফা ও আজিজুল বাওয়ানীকে কারাগার থেকে এজলাসে আনা হয়। রায় ঘোষণার পর মৃত্যু পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
রায় শুনতে আদালত প্রাঙ্গনে এসেছিলেন ফারিয়ার পিতা মাতা পলাশ হাওলাদার ও মোসা. ফাহিমা এবং নুসরাতের মা পারভীন আক্তার।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে কান্না বিজরিত কণ্ঠে তারা বলেন, সন্তানকে তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। এখন প্রত্যাশা এতটুকুই যে, উচ্চ আদালতে এই রায় যেন বহাল থাকে ও বর্বর ওই হত্যকারীদের যেন দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্লে গ্রুপে ভর্তি হওয়ার পর গত বছরের ৭ জানুয়ারি প্রথম স্কুলে যায় ফারিয়া। স্কুল থেকে এসে দুপুরে আরেক শিশু নুসরাতের সাথে খেলতে বের হয়। প্রতিবেশী গোলাম মোন্তফা ও তার চাচাতো ভাই আজিজুল বাওয়ানী লিপস্টিক দিয়ে সাজানোর প্রলোভন দিয়ে ঘরে নিয়ে যায়। দরজা বন্ধ করে মোবাইলের মাধ্যমে সাউন্ডবক্সে গান ছেড়ে তাদের ধর্ষণ করে। পরে আজিজুল নুসরাতকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং গোলাম মোস্তফা ফারিয়াকে গলা টিপে হত্যা করে।
এ ঘটনায় ওইদিনই নুসরাতের পিতা বাদী হয়ে রাজধানীর ডেমরা থানায় মামলা করেন। ২২ জানুয়ারি উপ-পরিদর্শক শাহ আলম ঘটনার তদন্ত শেষে দণ্ডিত দুজনকে আসামি করে চার্জশিট দেয়। একই বছর ২৩ মার্চ অভিযোগ গঠনের পর ট্রাইব্যুনালে মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে বিভিন্ন সময় দেওয়া ১৫ জন সাক্ষির সাক্ষ্য থেকে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ওই রায় দেওয়া হয়।