নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন স্থগিত

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: নিউইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আমব্রেলা সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন ২১ অক্টোবর রবিবার হচ্ছে না। কুইন্স সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এই আদেশের বিরুদ্ধে শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আদালতে মোশনও হয়েছিল। কিন্তু আদালত ৩০ অক্টোবরের শুনানির পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানিয়েছেন। আদালতের এই সিদ্ধান্তের পরই রবিবারের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশন।

মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক ও সমর্থকের স্বাক্ষর না থাকায় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী নয়ন-আলী প্যানেলের কার্যকরী সদস্য প্রার্থী আকবর আলী ও জে আর চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন ওই দুই প্রার্থী এবং জনৈক শরীফুল ইসলাম। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত।

স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান জামাল আহমেদ জনির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ইত্তেফাককে জানান, আদালতের নির্দেশের বাইরে নির্বাচন কমিশনের যাওয়ার সুযোগ নেই। আগামী ৩০ অক্টোবর শুনানির পর আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। তিনি বাংলাদেশ সোসাইটির সকল ভোটার, প্রার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সবার প্রত্যাশা ছিল রবিবার ভোটাররা তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবেন। কিন্তু মামলার জটিলতার কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়ে গেলো।

জামাল আহমেদ জনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশের পর শুক্রবার আমরা আদালতে মোশন করেছিলাম। নির্বাচন স্থগিত হলে নন-প্রফিট সংগঠন হিসাবে বাংলাদেশ সোসাইটি এবং প্রার্থীরা কী ধরণের সঙ্কটে পড়বে তা উপস্থাপন করেছিলাম। কিন্তু আদালত আগামী ৩০ অক্টোবর শুনানির পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন। ফলে আদালতের নির্দশ মোতাবেক ২১ অক্টোবর রবিবারের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হলো।
আদালতের এই স্থগিতাদেশের ফলে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশ সোসাইটি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা স্বেচ্ছায় দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা ব্যক্তিগত ক্ষতির সম্মুখীন হলেও আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমরা পালন করা যাবো। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতিমধ্যে বিপুল অর্থ খরচ হয়ে গেছে। বিশেষ করে ভোটকেন্দ্র বুকিং, মিডিয়ার বিজ্ঞাপন, হলভাড়া ইত্যাদি খরচ সমন্বয় করার সুযোগ নেই। নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় প্রার্থীরাও বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

এদিকে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান কার্যকরী পরিষদ এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে আদালতের স্থগিতাদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেন। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটির তিনজন সদস্যের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২১ অক্টোবরের নির্বাচন স্থগিত করেছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে শুক্রবার মোশনও করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত আগামী ৩০ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। এদিন শুনানি শেষে আদালতের পরবর্তী নির্দেশের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।

বাংলাদেশ সোসাইটির হুইটনি অ্যাভিনিউর নিজম্ব ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী। সংগঠনের সভাপতি কামাল আহমেদ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান জামাল আহমেদ জনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি নির্বাচন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন।

Advertisement