ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: বলিভিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করলেন সিনেটর জেনাইন আনিয়েজ। সম্প্রতি সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের পদত্যাগের পর তার জায়গায় অভিষিক্ত হয়েছেন এই সিনেটর। মঙ্গলবার এক পার্লামেন্টে এক অধিবেশনে দেয়া ঘোষণায় আনিয়েজ বলেন, সংবিধান অনুসারে তার ওপরই এই দায়িত্ব বর্তায়। তবে এদিন অধিবেশনটি বর্জন করেছেন মোরালেসের সমর্থনকারী আইনপ্রণেতারা। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাংসদের সমর্থন না পাওয়া সত্ত্বেও, নিজেকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেছেন আনিয়েজ। বলিভিয়ার সাংবিধানিক আদালত তার নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। তিনি খুব শিগগিরই নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, মোরালেসের বিরুদ্ধে গত মাসে আয়োজিত নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছে বিরোধী দলগুলো।
এ নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ ও সেনাবাহিনীর চাপের মুখে রোববার পদত্যাগ করেছেন মোরালেস। পদত্যাগের পর দেশত্যাগ করে মেক্সিকোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন একাধিক মন্ত্রীও। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করছে তার সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েক ডজন। এমতাবস্থায় পুলিশকে সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে সামরিক বাহিনী। মোরালের তার পদত্যাগের পেছনে সামরিক বাহিনী জড়িত রয়েছে বলে দাবি করেছেন।
এদিকে, মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনিয়েজের নিয়োগ অধিবেশনে যোগ দেননি মোরালেসের সমর্থক আইনপ্রণেতারা। অধিবেশন পরিচালনার জন্য উপস্থিত ছিলেন না প্রয়োজনীয় সাংসদরা। আনিয়েজের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের অভিযোগ তুলেছেন মোরালেস। অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ায় বলিভিয়ার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছেন আনিয়েজ। তিনি পূর্বে বলিভিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের উপনেতা ছিলেন। এক টুইটে তার নিয়োগের সমালোচনা করে মোরালেস লিখেছেন, এটি বলিভিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ধূর্ত ও পৈশাচিক অভ্যুত্থান।
প্রসঙ্গত, ২০ অক্টোবর বলিভিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে অল্প ব্যবধানে জয়ী হন মোরালেস। তবে নির্বাচনটি ঘিরে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলো। এ নিয়ে দেশজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভও সেনাবাহিনীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোববার পদত্যাগ করেন তিনি।
২০০৬ সাল থেকে বলিভিয়ার প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মোরালেস। লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত তিনি। টানা তিন বার নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তার শাসনামলে দেশটিতে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। গত মাসের ২০ তারিখ নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো লড়ে জয়ী হন তিনি। কিন্তু বলিভিয়ার নিয়ম অনুসারে, কোনো প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ তিন বার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। ওই নিয়ম না মানায় তার এমন সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি দেখা দেয় জনগণের মাঝে।