ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন এবং জেলা জজ বা দায়রা জজকে দায়িত্ব দিয়ে গেজেট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত আগের নিয়মেই নিম্ন আদালতে মাদকের মামলার বিচার চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এদিকে রাজধানীর বংশাল থানায় করা মাদক মামলার আসামি মো. মাসুদুল হক মাসুদকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই জামিন দেওয়া হয়। তবে জামিনের অপব্যবহার করা হলে জামিন বাতিল হয়ে যাবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার এ আদেশ দেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আল ফয়সাল সিদ্দিকী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন এবং জেলা জজ বা দায়রা জজকে দায়িত্ব দিয়ে গেজেট প্রকাশের বিষয়ে ১৩ অক্টোবরের মধ্যে আদালতকে জানানোর জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশ ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ থেকে কোনো অগ্রগতি জানাতে না পারায় আদালত আগের নিয়মেই মামলার বিচার করার আদেশ দেন।
মামলার এজাহারের অভিযোগ অনুযায়ী, ইয়াবা ও হেরোইনসহ গতবছর ২৭ ডিসেম্বর মাসুদুল হক মাসুদ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ বিষয়ে বংশাল থানায় করা মামলায় গত ২২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপরই নিম্ন আদালতে জামিন চান আসামি। কিন্তু ওই আদালত জামিনের আবেদন খারিজ করে। এই আদেশের বিরুদ্ধে জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মাসুদ। ওই জামিন আবেদনের ওপর শুনানিকালে নথি পর্যালোচনা করেন হাইকোর্ট।
নথিতে দেখা যায়, মাদক মামলাটি আমলে নিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর তার বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর তৃতীয় যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়েছেন। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে মামলাটি বিচারের জন্য তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোয় উভয় বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চান হাইকোর্ট। এছাড়াও মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের অগ্রগতি জানাতে আইন ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনাল স্থাপন সংক্রান্ত মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪৪ ধারা কার্যকরে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও জানাতে বলা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় আইন মন্ত্রণালয় আদালতকে জানায়, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। এ অবস্থায় গত ২৫ আগস্ট এক আদেশে হাইকোর্ট ১৩ অক্টোবরের মধ্যে গেজেট জারির বিষয়ে অগ্রগতি জানানোর নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি শুনানির জন্য উত্থাপিত হলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান। খুব শিগগিরই আইন সংশোধন করা হবে।
এসময় আদালত বলেন, আপনারাতো এই প্রক্রিয়ার কথা এর আগেও কয়েকদফা বলেছেন। কিন্তু তা হয়নি। এখনতো সারাদেশে নিম্ন আদালতে হাজার হাজার মামলা বিচারাধীন। তাই আমরা এ বিষয়ে একটি আদেশ দিচ্ছি। এরপর আদালত আদেশ দেন।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪৪(১) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করিতে পারিবে। (৪) উপ-ধারায় বলা হয়েছে, এই ধারার অধীন ট্রাইব্যুনাল স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সংশ্লিষ্ট জেলার যেকোনো অতিরিক্ত জেলা জজ বা দায়রা জজকে তাহার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবে।