ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন যে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছে তার বিশ্বস্ততা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে একটি আস্থা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হবে, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নের ধারা অব্যাহত রেখে আগামীতেও জনগণের এই আস্থা ধরে রাখা। কোন অবস্থাতেই যাতে এক ব্যক্তি দুই জায়গায় ভোটার হতে না পারে এবং রোহিঙ্গা বা অন্য কোন দেশের নাগরিক যেন অবৈধভাবে ভোটার হতে না পারে সে বিষয়ে কমিশনকে অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। সোমবার বিকেলে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হচ্ছে নির্বাচন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে নির্বাচন হলো ‘গণতন্ত্রের প্রাণভোমরা’। নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র হয় না আবার গণতন্ত্র ছাড়া নির্বাচন প্রায় অর্থহীন বা আত্মাহীন দেহের মতো। তাই দেশে দেশে গণতন্ত্র পাওয়ার আশায় হাজার বছর ধরে নির্বাচন চর্চা অব্যাহত রয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল, রাশিয়া, ফ্রান্স, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, পেরু, কাজাখস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ চালু করলেও বাংলাদেশের কেউ কেউ পুরোপুরিভাবে না জেনেই ইভিএম-এর বিষয়ে নেতিবাচক ধারণ পোষণ করছেন। বাস্তবতা হলো ১৯৭৫ এর পর বাংলাদেশের ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যে অপসংস্কৃতি চালু হয়েছিল তা সম্পূর্ণ দূর করতে হলে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের বিকল্প নেই।
মন্ত্রী বলেন, ইভিএম পদ্ধতি এই অপসংস্কৃতি দূর করতে মাইল ফলক হিসেবে কাজ করবে। তবে ইভিএম- পদ্ধতিকে আরো আধুনিক ও স্বচ্ছ করার জন্য ধারাবাহিক গবেষণা করতে হবে। “ট্রায়াল এন্ড এরার” এর ভিত্তিতে ইভিএম পদ্ধতিকে স্ট্যান্ডারাইজড তথা সার্বিক ত্রুটিমুক্ত করতে হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে যাতে মানুষ ঘরে বসেই অনলাইনে তার নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন এবং তার ভোটটি কোথায় গেল তা যেন নিশ্চিত হতে পারেন। কোন কেন্দ্রে মোট কত ভোট পড়েছে এবং কারা কারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন তাদের ছবি ও আইডি নম্বরসহ অনলাইনে তালিকা প্রকাশ করা যায় কিনা সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করতে হবে। এতে করে ভোটারের সংখ্যা ও উপস্থিতি নিয়ে কারো মনে কোন সংশয় থাকবে না এবং যিনি ভোট দিবেন তাকে ভোট গ্রহণের একটি কনফারমেশন স্লিপ দেয়া যায় কিনা সে ব্যাপারেও চিন্তা-ভাবনা করা যেতে পারে।
নির্বচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।