প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করে ঢাকা-দিল্লী উপকৃত হতে পারে। কারণ, এটি হবে সবুজ জ্বালানি এবং সস্তাও।প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে বুধবার সকালে সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এ কথা বলেন।সৌজন্য সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জানান, শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করে উভয় দেশই উপকৃত হতে পারে।হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, “বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের ছোটখাট কিছু বিষয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজেবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর মধ্যে বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।”
তিনি বলেন, “বিজেবি ও বিএসএফের মধ্যে বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের ছোট বড় সকল সমস্যার সমাধান করতে পারে।তিনি আরো বলেন, “আমরা চাই এ সমস্যার সমাধান হোক।” প্রধানমন্ত্রীও এতে সম্মত হয়েছেন বলে প্রেস সচিব জানিয়েছেন।ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কা সামলে ভারত স্বাভাবিকের দিকে ফিরে আসছে।করোনার ওমিক্রন ধরণ নিয়ে সকলেই সতর্ক উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভারতে এ পর্যন্ত প্রায় ২১ জনের শরীরে নতুন এ ধরন শনাক্ত হয়েছে।শ্রিংলা বলেন, “ওমিক্রন ধরনে রূপান্তরের আগে কোভিড-১৯ ১৫ বার পরিবর্তিত হয়েছে। আফ্রিকার দেশগুলো ছাড়াও করোনার এই ধরন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শনাক্ত হয়েছে।হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানান।শ্রিংলা কোভিড-১৯ মহামারী কালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং বলেন, ভারতেও ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানোয় তিনি ধন্যবাদ জানান এবং একে ‘বন্ধুত্বের বিশেষ বন্ধন’ হিসেবে উল্লেখ করেন।তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতে উভয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে।পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “ভারত বিশ্বজুড়ে তার মিশনসমূহে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী পালন করবে। এছাড়া, ওই সকল দেশের স্থানীয় জনগণের মাঝেও বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরবে।শ্রিংলা আশা করছেন, কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হলে জাতিসংঘে ভারত ও বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি যৌথ ছবির প্রদর্শনী করবে। তিনি তথ্য প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতার বিষয়েও কথা বলেন এবং এ খাতে নতুন প্রযুক্তি শেয়ার করারও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।শ্রিংলা বলেন, “বাংলাদেশে-ভারত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে চায়।ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শিলিগুড়ি-পার্বতী পুর, ঢাকা-শিলিগুড়ি এবং ঢাকা-জলপাইগুড়ি রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশও কোভিড-১৯ মহামারির ধকল সামলে উঠে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থার দিকে ফিরছে।তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তার লুকিয়ে থাকার দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন এবং ভারতীয় স্বীকৃতি তাদের অভিভূত করেছে বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ৯৯ শতাংশ লোক বিদ্যুতের আওতায় রয়েছে।যেখানে গ্রিড লাইন নেই সেখানে সরকার সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।এ সময়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা অশোক মল্লিক এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।