ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে রয়েছে পুরো বিশ্ব। যুক্তরাষ্ট্রও এর বাইরে নয়। দেশটিতে এই ভাইরাস সংক্রমণের কারণে প্রাণহানী ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এ বিষয়ে কোনো ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে না।
কথিত আছে যে, রোম নগর যখন পুড়ছিল, সম্রাট নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। করোনাভাইরাসের এই চরম প্রাদুর্ভাবের সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই উদ্বেগহীনতা বা গা ছাড়া ভাব নিরোর কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে আমাদের।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র স্টেফানি গ্রিসাম জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবের সময়েও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সকল কাজ স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যাবেন। করোনাভাইরাসে সংক্রমণের বিষয়ে তাঁর কোনো ধরনের উদ্বেগ নেই। এই প্রেক্ষিতে তিনি কোনো ধরনের সমাবেশও বাতিল করতে যাচ্ছেন না।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র বলেছেন, আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমাদের প্রেসিডেন্ট ঘুমান না এবং আমি তাকে প্রতিদিন ১৫-১৬ ঘণ্টা কাজ করতে দেখি। আমার এ বিষয়টা মনে করতে কোনো সমস্যা নেই যে, তিনি সুস্থ-সবল ও ভালো আছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক বিশেষ নিবন্ধে এ প্রসঙ্গটি তুলে ধরা হয়েছে। এই নিবন্ধের লেখক মাইকেল ডি’এন্টোনিও।
মাইকেল ডি’এন্টোনিও সাম্প্রতিক ওই ইস্যুতে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনসাধারণের সম্পর্কে গ্রিশাম যদি উদ্বিগ্নই হয়ে থাকেন তবে বড় বড় ইভেন্টে ট্রাম্পের অংশ নেওয়ার বিষয়ে তিনি কিভাবে কথা বলেন?
তিনি বলেন, ভাইরাসটি আমাদের সকলের জন্য হুমকি। এটা যদি তিনি বুঝতে পারতেন তবে এভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতেন না।
মাইকেল ডি’এন্টোনিও এর অভিমত, স্টেফানি গ্রিসামের কথায় আমরা সকলেই এটা ভেবে নিতে পারি যে, তিনি তার বসকে (ট্রাম্প) সুপারম্যান হিসেবে তুলে ধরছেন। তবে বস্তুত এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প যা করছেন তা সম্পূর্ণ উল্টো।
ডি’এন্টোনিও লিখেছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনে ট্রাম্পের ক্রোধের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সম্প্রতি তিনি মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং চিফ অব স্টাফ মাইক মুলভেনিকে বরখাস্ত করেছেন। কিন্তু মাইক সংবাদের শিরোনাম হয়ে ‘অভিনয়’ করার সুযোগ পাননি। তাকে গত সপ্তাহান্তে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প। অভিশংসনের সময় যারা তাঁর সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদেরকে ছাড় দেননি ট্রাম্প।
কীভাবে সাড়া দেবেন-এই ভয়ে ট্রাম্পকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা খারাপ সংবাদ দেওয়ার বিষয়ে সাধারণত উদ্বিগ্ন থাকেন।
সম্প্রতি সিডিসির কর্মকর্তা উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
সংবাদমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, এই খবরে ট্রাম্প এতটাই ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন যে, তিনি কর্মকর্তাদের জনসমক্ষে বিবৃতি দেওয়া বন্ধ করার বিষয়ে আদেশ দিতে (মুখপাত্রের সঙ্গে) আলোচনা করেন।
তবে, শেষ পর্যন্ত তারা (কর্মকর্তারা) এর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।