ব্রিট বাংলা ডেস্ক : কানাডার মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যগণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় সময় ১৯ এপ্রিল অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানে এ সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় বক্তারা বলেন, এ যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি কেবলই সময়ের দাবী।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কানাডার প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বন বিষয়ক মন্ত্রী এবং অটোয়া ভানিয়ের এবং নেপিয়ান এর সংসদ সদস্যগণ। অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কূটনীতিক কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, গ্লোবাল এ্যাফেয়ারস কানাডার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ, কানাডার স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বৃন্দ প্রমুখ।
বাংলাদেশে হাইকমিশনার মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে বিভক্ত ছিল। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ‘গ্রাজুয়েশন অব বাংলাদেশ ফ্রম এলডিসিএস: এ্যা ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় এবং দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অতঃপর, হাইকমিশনার কাউন্সিলর জনাব আলাউদ্দিন ভূঁইয়া আলোচনা সভার শুরুতে স্বল্পোন্নত দেশের সংজ্ঞা, এ সংক্রান্ত বিভিন্ন উপাত্ত, উত্তরণের সূচক, বাংলাদেশের উত্তরণের পরিক্রমা সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করে।
এর পর, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের মধ্য হতে কানাডার অন্টারিও প্রদেশের মন্ত্রী মিজ নাতালি দে রসিয়ের, সংসদ সদস্য মিজ মোনা ফন্তিয়ে এবং জনাব চান্দ্রা আরিয়া উৎসাহব্যঞ্জক শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। মিজ নাতালি দে রসিয়ের কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের গঠনমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানান। প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ড. মনজুর চৌধুরী এবং অধ্যাপক ওমর সেলিম শেখ। মূল আলোচনায় অংশ নেন কানাডার স্বনামধন্য কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জনাব এলিওট টেপার, অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা মিজ নিপা ব্যানারজী, ব্যাংক অব কানাডার পরিচালক জনাব সুব্রত সরকার, ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জনাব অমিত চাকমা এবং গ্লোবাল এ্যাফেয়ারস কানাডার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক নির্বাহী পরিচালক এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার সাবেক হাইকমিশনার জনাব রবার্ট ম্যাক ডুগাল। বক্তারা সকলেই এই প্রক্রিয়া তরান্বিত করনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সমাপনী বক্তব্যে মান্যবর হাই কমিশনার জনাব মিজানুর রহমান বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যের এক তুলনামূলক বিশ্লেষণ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়াবার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি সকলকে একযোগে কাজ করার মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের এই অভূতপূর্ব অগ্রযাত্রায় কানাডার ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং দু’ দেশের মধ্যকার বিরাজমান অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নে সন্তোষ প্রকাশ করে। তিনি এ ধারা অব্যাহত রাখতে দু দেশের সচেষ্ট থাকার গুরুত্বের উপর জোর দেন।সভায় আলোচকবৃন্দকে ফুল দিয়ে সম্বর্ধিত করেন হাইকমিশনার প্রথম সচিব মিজ অপর্ণা পল।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি শুরু হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি শীর্ষক সমবেত সঙ্গীতের মাধ্যমে এবং এর পর একে একে পরিবেশিত হয় নজরুল সঙ্গীত, দেশাত্মবোধক এবং পল্লিগীতি। অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী যন্ত্রসঙ্গীত বাঁশি বাদনের মাধ্যমে। এই পর্বে অংশগ্রহণ করেন শিশির শাহনেওয়াজ, ডালিয়া ইয়াসমীন, ফারহানা আহমেদ চৌধুরী এবং সাখাওয়াত হোসেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের কাউন্সিলর মিজ ফারহানা আহমেদ চৌধুরী এবং এর সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন হাই কমিশনের হেড অব চ্যান্সারি জনাব আলাউদ্দিন ভুঁইয়া।