ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: বাংলাদেশে বৈধ ও অবৈধভাবে কর্মরত আড়াই লাখ বিদেশি বছরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে এসব কর্মীরা দেশের বাইরে বছরে প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পাচার করছেন।
আজ বুধবার ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে বিদেশিদের কর্মসংস্থান: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি।
গবেষণা ও প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছেন মনজুর-ই খোদা। আর গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
গবেষণা প্রতিবেদনের উদ্বৃতি দিয়ে ড. ইফতেখার বলেন, বৈধ ও অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রায় আড়াই লাখ বিদেশি কর্মী কাজ করেন। যার মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী বৈধ কর্মী রয়েছেন ৯০ হাজার। এদের ন্যূনতম গড় মাসিক বেতন দেড় হাজার মার্কিন ডলার। সে হিসেবে বিদেশি কর্মীদের বার্ষিক আয় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৩০ শতাংশ স্থানীয় ব্যয় বাদে প্রায় ৩ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে চলে যায়। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে বৈধভাবে বিদেশে যায় মাত্র ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাকি অর্থ অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়ে যায়। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। যার মাধ্যমে সরকারের বার্ষিক রাজস্ব ক্ষতি ১২ হাজার কোটি টাকা।
এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে যারা কাজ করতে আসেন তাদের ৫০ শতাংশই ভ্রমণ ভিসায় আসেন। এখানে কাজ যোগাড় করে আবার দেশে ফিরে যান। পরে আবার ভ্রমণ ভিসা নিয়ে আসেন। বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিদের মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা বেশি। প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ভারতীয় বাংলাদেশে কাজ করছেন। এমনকি সরকারি প্রকল্পে যেসব বিদেশি কাজ করছেন তারাও ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে এসে কাজ করছেন।
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাক্ষাৎকার এবং আইনি নথি-নীতিমালা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য, গবেষণা প্রতিবেদন ও গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এ গবেষণা হয়েছে।
২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে করা গুণগত এ গবেষণায় কোনো জরিপ চালানো হয়নি, শুধু তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে টিআইবি জানিয়েছে।