বিশ্বজুড়ে কমে আসছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা

মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় শুক্রবার থেকে শনিবার- শেষ ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে কমেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। একই সঙ্গে সুস্থতার হারেও দেখা গেছে নিম্নমুখী প্রবণতা।সংকটময় পরিস্থিতি শুরুর পর থেকে বিশ্বে প্রাণঘাতী রোগটিতে আক্রান্ত, মৃত্যু ও শনাক্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠাদের সংখ্যা বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটার্সের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, রবিবার (৮ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার ২৯০ জন। আর মারা গেছেন নয় হাজার ছয়জন। একই সঙ্গে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন চার লাখ ১০ হাজার ৭৫৭ জন।আগের দিন শুক্রবার বিশ্বে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ছয় লাখ ৯৭ হাজার ৯৩১ জন। আর মৃত্যু হয়েছিল ১০ হাজার ২২৫ জনের। এছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন চার লাখ ৫৭ হাজার ২৯৫ জন।

অর্থাৎ গেল ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে এক লাখ ২৯ হাজার ৬৪১। এমনকি মৃতের সংখ্যাও কমেছে এক হাজার ২১৯। আর করোনায় আক্রান্তের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন এমন ব্যক্তিদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ৪৭ হাজার ৭০ জন।আগের দিন শুক্রবারের মতো শনিবারও করোনায় দৈনিক আক্রান্ত রোগীর হিসেবে শীর্ষে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া মহামারি আঁকারে থাবা বসানো ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন করোনার এশীয় উপকেন্দ্র (এপিসেন্টার) হিসেবে পরিচিতি পাওয়া দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায়।

ওয়ার্ল্ডো মিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ হাজার ৯৫০ জন। এ সময়ে প্রাণঘাতী রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মারা গেছেন ৩২০ জন।অন্য দিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায় করোনায় মারা গেছেন এক হাজার ৫৮৮ জন। যা ছিল শনিবার করোনায় দৈনিক মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। পাশাপাশি এদিন দেশটিতে করোনায় নতুন আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৭৫৩ জন।এছাড়া শনিবার বিশ্বের অন্যান্য যেসব দেশে করোনায় আক্রান্ত-মৃত্যুর উচ্চহার দেখা গেছে সে দেশসমূহ হলো- ব্রাজিল (নতুন আক্রান্ত ৪৩ হাজার ৩৩, আর মৃত্যু এক হাজার ২১৮), দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত (নতুন আক্রান্ত ৩৯ হাজার ৭০, মৃত্যু ৪৯১), ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান (নতুন আক্রান্ত ২৬ হাজার ৪৩৯, আর মৃত্যু হয়েছে ৩৮৩ জনের), যুক্তরাজ্য (নতুন আক্রান্ত ২৮ হাজার ৬১২, মৃত্যু ১০৩), ফ্রান্স (নতুন আক্রান্ত ২৫ হাজার ৬৫৭, আর মারা গেছেন ৩২ জন), ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্ক (নতুন আক্রান্ত ২৫ হাজার ১০০, আর প্রাণ হারিয়েছেন ১১২ জন), রাশিয়া (নতুন আক্রান্ত ২২ হাজার ৩২০, আর মৃত্যু হয়েছে ৭৯৩ জনের) এবং মেক্সিকো (নতুন আক্রান্ত ২১ হাজার ৫৬৩, এর মধ্যে মারা গেছেন ৫৬৮ জন)

বিশ্বজুড়ে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর আছেন এক কোটি ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯ জন। তাদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ বহন করছেন এক কোটি ৬২ লাখ ৫৪ হাজার ৫২৮ জন। আর গুরুতর অসুস্থ আছেন ৯৮ হাজার ৫৪১ জন।ওয়ার্ল্ডো মিটার্সের পরিসংখ্যান বলছে, মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২০ কোটি ২৯ লাখ ৩০ হাজার ৮৬২ জন, যার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৪৭ জনের।এছাড়া প্রাণঘাতী এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ১৮ কোটি ২২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬ জন।২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল চীনে।মূলত এরপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরবর্তীকালে পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।যদিও তাতেও এই ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় শেষ পর্যন্ত সেই বছরের ১১ মার্চ করোনা ভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।

Advertisement