ব্রিটবাংলা ডেস্ক : আইএস কন্যা শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেছে হোম অফিস। মঙ্গলবার হোম সেক্রেটারী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ইস্ট লন্ডনে শামীমা বেগমের পরিবারকে এই তথ্য জানিয়েছে হোম অফিস। শামীমার আইনজীবি তাসনিম আখন্জি বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন।
https://britbangla24.com/news/71070
শামীমা বেগম বর্তমানে সিরিয়ার উত্তর এলাকায় আল হাউল রিফিউজি ক্যাম্পে রয়েছেন। এক ড্যাচ আইএস সদস্যের সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। সোমবার তিনি এক ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এর আগে তার দুটি সন্তান মারা গেছে। তৃতীয় সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই শামীমা বেগম গত সপ্তাহে টাইমসকে দেওয়া এক স্বাক্ষাতকারে ব্রিটেনে ফেরার আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন। শামীমা বেগমের বয়স বর্তমানে ১৯ বছর।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ইস্ট লন্ডনের বাঙালীপাড়া বলে খ্যাত টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনালগ্রীন একাডেমীর আরো দুই সঙ্গী খাদিজা আখতার এবং আমীরা আবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শামীমা বেগম তুরস্ক হয়ে সিরিয়া পাড়ি জমিয়েছিলেন। তাদের তিন জনের বয়স তখন ১৫ বছর ছিল।
গত সপ্তাহে টাইমসে স্বাক্ষাতকার দিয়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমানোর প্রায় চার বছর পর আলোচনায় আসেন শামীমা। এরপর বিবিসি এবং স্কাই নিউজও শামীমার সন্ধান পায়। এরপর থেকেই শামীমার ব্রিটেনে ফেরা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। গত শুক্রবার হোম সেক্রেটারী সাজিদ জাভিদ বলেছিলেন, বিদেশে কোন সন্ত্রাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোন ব্রিটিশ নাগরিককে দেশে ফিরে আসার ক্ষেত্রে তিনি বাঁধা দিতে দ্বিধা করবেন না। এরপরেও যদি কেউ ফিরে আসে তবে তাকে যথাযথ তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়ার মুখামুখি হতে হবে। মঙ্গলবার হোম সেক্রেটারী শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্বই কেড়ে নিলেন। বিশেষ কারণে যে কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন হোম সেক্রেটারী। হোম অফিস থেকে শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে (রিভোক) করার চিঠিটি ইস্ট লন্ডনে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই তথ্যটি সিরিয়ায় শামীমাকে অবহিত করতে তার পরিবারকে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
শামীমার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল গত সপ্তাহেই। সে সিরিয়ার নাগরিক নয়। ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে তাকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন লর্ড কার্লাইল। তার মতে, পৃথিবীতে কোন ব্যক্ত স্টেইটলেস থাকতে পারে না। আইন অনুযায়ী তাকে কোনো না কোনো দেশের নাগরিকত্ব থাকতে হবে। এই যদি আইন হয়, তাহলে প্রশ্ন উঠেছে, শামীমা স্টেইটলেস থাকবে কিভাবে? তবে শামীমা বেগম স্টেইটলেস নন। তিনি বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব বহন করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হোম অফিসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার পর বিষয়টি হয়তো পরিস্কার হবে। হোম সেক্রেটারীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শামীম বেগম আপিল করতে পারবেন বলেও হোম অফিসের নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।