রাজনীতিতে কৌতূহল, কাদের মির্জার গন্তব্য কোথায়?

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: আবদুল কাদের মির্জা। ২০২১ সালের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র। খবরের শিরোনাম হচ্ছেন বারবার। কখনো দলের নেতাদের সমালোচনা করছেন। কখনো জড়াচ্ছেন বাহাসে। কখনোবা বসে পড়ছেন থানার সামনে। তিনি ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূলের নেতা। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র।

তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। যদিও কখনো কখনো কাদের মির্জা বড় ভাইয়েরও সমালোচনা করেন।

হরতাল-থানা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি পালন করে সর্বশেষ আলোচনার জন্ম দেন তিনি। শুক্রবার তার সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়ান সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের সঙ্গে। বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন এই সংঘর্ষে। সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির। পরের দিনও হরতাল কর্মসূচি পালন করেন কাদের মির্জা। তাকে দল থেকে বহিষ্কার নিয়ে বিভক্ত নোয়াখালী আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ খবর হচ্ছে ঘোষিত চলমান সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, দলের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনাতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কী চান কাদের মির্জা? কেন একের পর আলোচনার জন্ম দিচ্ছেন তিনি। দীর্ঘদিন রাজনীতি করলেও জাতীয়ভাবে তিনি আলোচনায় আসেন এ বছরের শুরুর দিকে। যখন তার একাধিক বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। একটি বক্তব্যে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে তিন-চারটা আসন ছাড়া বাকি আসনে আমাদের এমপিরা দরজা টোয়াই পাইতো ন (খুঁজে পাবে না)। এটাই হলো সত্য কথা।’ আরেকটি সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘গতবারের নির্বাচনটা অতি উৎসাহীদের হাতে ছিল। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাকে গাছটা দাও, তারা পাতা-টাতাসহ দিয়েছে।’ একের পর এক আলোচিত-সমালোচিত বক্তব্য দিয়ে যান তিনি। কেউ কেউ বলেছিলেন, ভোট টানার জন্য তিনি এসব কথা বলছিলেন। যদিও কাদের মির্জা ও তার সমর্থকরা জানিয়েছিলেন, এরআগে তিনি অসুস্থ হয়ে আমেরিকায় যান। সেখানে তার চিকিৎসা হয়। তখন তিনি শপথ নিয়েছিলেন, সবসময় সত্য বলবেন।

পৌর ভোটে ফের জয় পান কাদের মির্জা। জয়ের পর বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের বাসায় যান তিনি। ভোটের পরও নোয়াখালীর রাজনীতি নিয়ে সরব থেকে যান কাদের মির্জা। সংসদ সদস্য একরামুল হক চৌধুরী ও নিজাম হাজারীর সমালোচনায় মুখর থাকেন সবসময়। সমালোচনা করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেরও।

দৃশ্যত এই সরব অবস্থান জাতীয় রাজনীতিতে কাদের মির্জাকে পরিচিতি এনে দিয়েছে। দল এখনো তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। তাদের দ্বন্দ্বের রাজনীতির বলি হয়েছেন এক সাংবাদিক। রক্তাক্ত হয়েছে কোম্পানিগঞ্জ। কী চান কাদের মির্জা? নোয়াখালীর রাজনীতির কতৃত্ব? অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা? নাকি এটা কেবল তার কথার কথা। তার শক্তির উৎসই বা কি?

কাদের মির্জা অধ্যায় কীভাবে শেষ হবে। তিনি কি এবার চুপ হয়ে যাবেন? নাকি আগের মতোই দু’চার দিন পর আবার সরব হবেন? তার বিরুদ্ধে কি প্রশাসনিক বা সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে? পুরো বিষয়টি নিয়েই তৈরি হয়েছে কৌতূহল।

Advertisement