বিভিন্ন এলাকায় গোলযোগ আর শঙ্কার মধ্যে চতুর্থ ধাপে ৮৩৬ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) সুষ্ঠু ভোটের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে বলে আশ্বস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে। এ ধাপে ৭৯৮ ইউপিতে ব্যালট পেপারে এবং ৩৮টিতে ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।বেশ কিছু এলাকায় সহিংসতা ও অভিযোগের মধ্যে এ ভোট হচ্ছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের তিন ধাপে ভোটের আগে, ভোটের দিন এবং ভোটের পরে অর্ধশতাধিক লোকের প্রাণহানির তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে।শনিবার এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং সহিংসতা রোধে মাঠ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “স্থানীয় নির্বাচনে একেবারে তৃণমূলে প্রতিযোগিতা বেশি থাকায় কোথাও কোথাও ব্যক্তিগত রেষারেষি, পূর্বশত্রুতার জের ও গোলযোগের ঘটনা ঘটে থাকে। “সহিংসতা যেসব এলাকায় ঘটার শঙ্কা রয়েছে, এমন বিবেচনায় কিছু এলাকায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যও তুলনামুলক বেশি নিয়োজিত করা হয়েছে।বরাবরের মতো এবারও সার্বিক বিষয়ে কমিশন সজাগ রয়েছে। কোনো ধরনের গোলযোগ, অভিযোগ যেন না ঘটে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।ইউপি ভোটকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু নির্বাচনী এলাকায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে এবার। পরিস্থিতি সামলে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে ইসি। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগের মধ্যে সংসদ সদস্যদের এলাকা ছাড়ার জন্য বলেছে নির্বাচন কমিশন।শনিবার ইসির নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, নির্বাচনকে সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৮৩৬ ইউপির মধ্যে ৭৯৮ ইউপিতে ব্যালট এবং ৩৮টিতে ইভিএমে ভোট হবে।
তিনি বলেন, “ভোটকে সামনে রেখে আচরণবিধি অনুসরণে ব্যবস্থা নিতে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়।”এতে বলা হয়- অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।এ ছাড়া, যেসব এলাকায় সংসদ সদস্যদের প্রচার বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করার অনুরোধ করেছে কমিশন। তবে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে সংসদ সদস্যরা ভোট দিতে তার ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন।নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখার পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানান, নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছে। ভোটের পরেও তারা থাকবেন। সেই সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটরাও রয়েছেন।করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপে গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর এবং দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বর, তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর ভোট হয়।চতুর্থ ধাপের রোববার ৮৩৬ ইউপিতে ভোট হবে। এবার পঞ্চম ধাপে ৭০৭ ইউপিতে ৫ জানুয়ারি এবং ৬ষ্ঠ ধাপে ৩১ জানুয়ারি ২১৯ ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।