রোজায় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম, মাংস বিক্রি করবে সরকার

পবিত্র রমজান মাসে রাজধানীতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।আগামীকাল ১ রমজান থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত এই ভ্রাম্যমান বিক্রয় কার্যক্রম চলবে।মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম আজ বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

এ সময় শ ম রেজাউল করিম বলেন, পবিত্র রমজানে সাধারণ মানুষ যেন তার সাধ্যের মধ্যে দুধ, ডিম ও মাংস কিনতে পারেন, সেজন্য সরকার ভ্রাম্যমান বিক্রয় কার্যক্রম চালু করছে। সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের মহামারীর সময় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থা চালু করে খামারি ও ভোক্তাদের উপকার করেছে, অর্থনীতি সচল রেখেছে, যারা বিপণের সাথে বিভিন্নভাবে যুক্ত তাদের সহায়তা করেছে। সে ধারাবাহিকতায় রমজানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী। দাপ্তরিক ম্যান্ডেট না হলেও আমরা মানুষের উপকারার্থে এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ঢাকার ২০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।মন্ত্রী আরো বলেন, এ বছর প্রাথমিকভাবে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হবে। তবে আমরা যে দাম ধার্য করেছি এটা নির্ধারিত নয়।তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে উৎপাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিমের দাম নির্ধারণে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি রমজান মাসে পর্যায়ক্রমে আশা করি এটা আরো কমে আসবে।তিনি বলেন, একইভাবে আমরা আশা করছি, মাংসের দাম আরো কমে আসবে। অন্যান্য সামগ্রীর দামও পর্যায়ক্রমে কমে আসবে। প্রতিদিনের অবস্থান অনুযায়ী এটি পরিবর্তিত হবে। তবে কোনভাবেই প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত মূল্যের উপরে যাবে না। আমরা চেষ্টা করব এ মূল্যের নিচে রেখে কিভাবে মানুষকে সাহায্য করা যায়।

তিনি আরো করেন, সাধারণ মানুষদের কথা বিবেচনা করে এবার দুধের আধা লিটারের ছোট প্যাকেট, অল্পপরিমাণ ডিম এবং আধা কেজির মাংসের প্যাকেট রাখা হবে যাতে একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষও তার সাধ্যের ভেতর এসব পণ্য কিনতে পারেন। আমাদের লক্ষ্য সচ্ছল মানুষরা নয়। যারা তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের মানুষ, তাদের পাশে শেখ হাসিনা সরকার দাঁড়াতে চায়।মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় রমজান মাসে মানুষকে সাহায্য করতে, তাদের কষ্ট লাঘব করতেই সরকার এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।শ ম রেজাউল বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে রমজানে মানুষ উদারচিত্তে মানুষকে সাহায্য করে, আর আমাদের কিছু অতি মুনাফালোভী ব্যক্তি রমজানে মানুষকে কষ্ট দেয়, ভেজাল পণ্য দিতে চায়। এদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে।এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, যেখানে অন্যায় হবে, যেখানে খারাপ খাবার সরবরাহ করা হবে, মানসম্মত পণ্যের পরিবর্তে ভেজাল দেওয়া হবে, যেখানে অতিরিক্ত দাম নেওয়া হবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ড. নাহিদ রশীদ।এতে আরো বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন এবং ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স, বাংলাদেশ’র সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাসান।

Advertisement