সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভয় পায়: প্রিন্স

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: সরকার অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকেও ভয় পায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স। সোমবার নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আওয়ামী দুঃশাসন বিরোধী গণতন্ত্র পূণ:রুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি উপ-নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলেই যেন সরকার ও আওয়ামী লীগের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়। তারা বিএনপিকে যেমন ভয় পায় তেমনি জনগণের অংশগ্রহণে উৎসবমূখর পরিবেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকেও ভয় পায়। তারা জানে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তাদের ভরাডুবি সুনিশ্চিত। সেজন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়া মাত্রই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী বিধি-বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দলীয় ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে বিএনপি প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, মামলা, হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশকে ধ্বংস করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে নির্বাচনকে ব্যর্থ করে দিতে চায়।

তিনি বলেন, ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বেপরোয়াভাবে বীরদর্পে হামলা চালাচ্ছে বিএনপি’র প্রার্থী, সমর্থক ও ভোটারদের ওপর।

এছাড়া পুরনো মামলা কিংবা নতুন গায়েবী মামলার হুমকি দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশী নির্যাতন ও গ্রেপ্তার তো ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপ-নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের ওপর চলছে আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা ও নির্যাতন। ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। তবে জনগণ ভালভাবেই বুঝতে পারছে যে, বর্তমান সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের ফলে সারাদেশে নজীরবিহীনভাবে নারী ও শিশু ধর্ষণ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রবমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতি, সরকারী দুর্নীতি, লুটপাট ও সন্ত্রাস এবং নানান দুস্কর্মকে আড়াল করতেই সরকার তাদের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভোট ডাকাতির খেলায় উঠেপড়ে লেগেছে।

বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, সরকারের নিকট একটি বিষয় সন্দেহাতীতভাবে পরিস্কার হয়ে গেছে যে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের পরাজয় নিশ্চিত। তাই তারা দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে বল প্রয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সকল নির্বাচনসহ জাতীয় নির্বাচনে নিজ দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে চায়। উপ-নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের মতোই উক্ত আসন দুটিতে প্রহসনের নির্বাচন করতে প্রস্তুত সরকারের আজ্ঞাবহ প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনের সদস্যরা। বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশন মনে করছে যে, নির্বাচনের নামে অপকর্ম করলেও তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবেনা। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, জনগণ ক্ষিপ্ত হলে তাদের পালাবার পথ থাকবে না।

তিনি বলেন, গতকাল ২৫ অক্টোবর পুরাতন ঢাকার মালিটোলায় অবস্থিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়’ এর স্কুল গেট থেকে ভোটচুরির নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে স্কুলের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ জিয়ার বীরত্বপূর্ণ অবদান এবং আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৬ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকা শহীদ জিয়াউর রহমানের নামে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। বিএনপি’র পক্ষ থেকে এই প্রতিহিংসাপরায়ণ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর নামফলক পুণ:স্থাপনের জোর আহবান জানাচ্ছি।

Advertisement