সুনামগঞ্জে হিন্দুদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার দাবি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি : সুনামগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হেফাজতে ইসলামীর জঙ্গী মৌলবাদীদের সন্ত্রাসীদের সাম্প্রদায়িক হামলার তীব্র নিন্দা করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য । সংগঠনের এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গণমাধ্যমে সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দিরাই উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত কয়েকটি গ্রামে মাইকে ঘোষণা দিয়ে শতাধিক বাড়িতে হামলা, মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার সংবাদে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। স্বাধীনতার মাসে মুক্তিযুদ্ধের আত্মস্বীকৃত বিরোধিতাকারী মৌলবাদী দুর্বৃত্তদের এ ধরনের ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডের আমরা তীব্র নিন্দা করি। এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, হেফাজতে ইসলামের একটি সমাবেশের পর হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে জনৈক ঝুমন দাসের ফেইসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট দেয়ার কারণে হেফাজতের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে, যদিও পুলিশ হামলার আগেই ঝুমন দাসকে গ্রেফতার করেছে। এই হামলা থেকে হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদারের বাড়িও রেহাই পায় নি।
‘মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে হেফাজত নেতারা বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান মিত্র ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার পাশাপাশি সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমনকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে তারা আবারও প্রমাণ করেছেন তাদের শীর্ষ নেতারা ’৭১-এ যেভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগিতা করতে গিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে জেহাদ করেছিলেন এবং বিভিন্ন ঘাতক বাহিনী গঠন করে ইসলামের নামে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিলেন, এখনও তারা একই অবস্থানে রয়েছেন। মামুনুল হক ও বাবুনগরী সহ হেফাজতে ইসলামের মৌলবাদী সন্ত্রাসী নেতাকর্মীরা ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলে কী ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালিয়েছিলেন তা আমরা ভুলে যাইনি। এখনও তারা ওয়াজের নামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ভিন্নধর্ম ও ভিন্নমতের অনুসারী সহ নির্মূল কমিটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে চরম উষ্কানি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান করে ধর্মের নামে যেভাবে মানুষকে উত্তেজিত করে দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছেন এর জন্য তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কয়েক ডজন মামলা করা যায়।
‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংবিধানবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সন্ত্রাসী বক্তব্যের জন্য হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে হেফাজতের সমালোচনাকারীদের যেভাবে গ্রেফতার করছে তা ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের মূল্যে অর্জিত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে কখনও মেনে নেয়া যায় না।
‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলাম ও তাদের সহযোগীদের নিন্দনীয় অবস্থান এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদানের প্রেক্ষিতে এসব দলের সকল সমাবেশ অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে সুনামগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং ভুক্তভোগীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির যুক্তরাজ্য সভাপতি নুর উদ্দিন আহমেদ সাধারণ সম্পাদক জামাল আহমদ খান সহ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

Advertisement