১ জুলাই থেকে রাত ৮টার মধ্যে ঢাকা শহর বন্ধের উদ্যোগ

ঢাকা শহরের বিশ্রামের প্রয়োজন উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, পৃথিবীর সব শহরেরই একটি সময়সীমা আছে, ঢাকা শহরের কোনো সময়সীমা নেই। ঢাকা শহরকে বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে। আগামী ১ জুলাই থেকে রাত ৮টা থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রেস্তোরাঁসহ অত্যাবশ্যকীয় কিছু ছাড়া সব বন্ধ হয়ে যাবে।শুক্রবার (১০ জুন) বিকালে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। যৌথভাবে এটির আয়োজন করে বুয়েট ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স (বিআইপি)।শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, বিশ্বের অন্যান্য শহর খোলা থাকার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। কিন্তু ঢাকা শহরের কোনো সময়সীমা নেই, ২৪ ঘণ্টা এই শহরের ওপর অত্যাচার চলে। ঢাকাকেও বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করছি, জুলাই থেকে আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে চাই।’

তিনি বলেন, করোনাকালে জনজীবন যখন স্তব্ধ ছিল তখন প্রকৃতিকে নবউদ্যমে জেগে উঠতে আমরা দেখেছি। কারণ প্রকৃতির বিশ্রাম করার সময় লাগে। তেমনি ঢাকা শহরের ব্যবস্থাপনার জন্য সময় প্রয়োজন। আমরা সারাদিনই ঢাকার উপর অত্যাচার করব আর ঢাকা আমাকে সুন্দর পরিবেশ উপহার দেবে, সেটা কামনা করা যৌক্তিক নয়। পৃথিবীর সব শহরেরই একটি সময়সীমা আছে। ঢাকা শহরের কোনো সময়সীমা নেই। সুতরাং এ বিষয়ে আমরা সবার সঙ্গে আলাপ করছি।ঢাকার জন্য কেমন বনায়ন হবে, সে বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, তিনটি গাছ লাগালে একটি কদম গাছ লাগাতে হবে। এই গাছে নির্দিষ্ট পাখিরা এসে বসে, যারা বিভিন্নধরনের কীটপতঙ্গ খেয়ে জীবনধারণ করে। এতে একদিকে আমরা ফুলের শোভা পাবো, অন্যদিকে কীটপতঙ্গ থেকে মুক্তি পাবো। এডিস মশার উৎপাত কমবে, কমে আসবে ডেঙ্গুর প্রকোপও।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৃষ্টিপাতের স্বাভাবিক সময় বদলে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘গতবছর টানা চার মাস বৃষ্টি হয়েছে। আষাঢ়-শ্রাবণের পাশাপাশি ভাদ্র-আশ্বিন মাসেও বৃষ্টি হওয়ায় জলাবদ্ধতার সমস্যা বেড়ে যায়। এতে এডিস মশা ও ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। গত বছর ৩৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, তাতেই ঢাকা নিমজ্জিত। এটি ৪৫৩ মিলিমিটারে পৌঁছালে এই শহর আর বসবাসের জন্য উপযুক্ত থাকবে না। এটি মাথায় রেখেই আমাদের কার্যক্রমগুলো সাজাতে হবে।’সেমিনারে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্পের টিম লিডার ড. আইনুন নিশাত জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।বিআইপি সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজা সুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বুয়েটের উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহিদ উল্লা খন্দকার, জিআইজেড বাংলাদেশের এ্যাডাপটেশন অব আরবান এরিয়াজ টু ক্লাইমেট চেইঞ্জ এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ড. ডানা দে লা ফনটেইন বক্তব্য রাখেন।

Advertisement