৩ ইইউ শক্তির চিঠি প্রত্যাখ্যান, ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি জারি রাখবে ইরান

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির অভিযোগ এনে জাতিসংঘের কাছে চিঠি দিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)-ভুক্ত তিন দেশ। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুঁতেরাকে এ বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনজিএসসি)-কে অবহিত করতে আহ্বান জানিয়েছেন দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতেরা। তবে তাদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। চিঠিটিকে ‘মরিয়া মিথ্যাচার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার প্রকাশ করেছে দেশটি। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

খবরে বলা হয়, বুধবার গুঁতেরার কাছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী নিয়ে চিঠি দেয় জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। চিঠিতে বলা হয়, ইরান পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে ইরান। এ বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে তার পরবর্তী প্রতিবেদনে অবহিত করতে গুঁতেরাকে আহ্বান জানিয়েছে ওই তিন দেশ। বলেছে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে ইরান ২০১৬ সালে স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তির (জেসিপিওএ) শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
বৃহস্পতিবার ইইউ শক্তিগুলোর চিঠির প্রতিবাদ জানিয়েছে ইরান।

জানিয়েছে, তারা তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি জারি রাখবে। গুঁতেরাকে পাঠানো এক চিঠিতে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত মাজিদ তাখতে রাভানচি লিখেন, ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযান সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রসঙ্গত, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কাযক্রমের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্পর্ক নেই বলে দাবি করে ইরান।

এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ ইউরোপীয় শক্তিগুলোর পদক্ষেপটির তীব্র সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, জেসিপিওএ’র শর্ত পূরণে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে মরিয়া মিথ্যাচার হিসেবে ইউএনজিএসসি’তে ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে চিঠি দিয়ে ইউরোপীয় তিন দেশ। তিনি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিকে যুক্তরাষ্ট্রের হয়রানির কাছে নতী স্বীকার না করতে আহ্বান জানিয়েছেন।

২০১৫ সালে জাপান, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে জেসিপিওএ চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। চুক্তির শর্তানুসারে, ইরানকে সকল নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দেবে দেশগুলো ও বদলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ সীমিত রাখবে ইরান। তবে গত বছর চুক্তিটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এতে টান পড়ে ইরানের অর্থনীতিতে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পথ অনুসরণ না করে, ইরানের সঙ্গে চুক্তি বজায় রাখে বাকি সদস্যরা। তারা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রাখার চেষ্টা জারি রেখেছে। তবে সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে চুক্তিটির শর্ত না মানার অভিযোগ এনেছে দেশগুলো। আগামী ২০শে ডিসেম্বর চুক্তিটির সঙ্গে ইরানের সঙ্গতি নিয়ে বৈঠকে বসবে ইউএনজিএসসি।

Advertisement