ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারির পটভূমিতে আজ বৃহস্পতিবার (৭ মে) মালদ্বীপ থেকে দেশে ফিরছেন ৪০০ বাংলাদেশি।
গতকাল বুধবার ঢাকায় প্রবাসী কর্মীদের ফেরত আনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পঞ্চম আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মালদ্বীপ থেকে আজ দেশে ফিরবেন ৪০০ বাংলাদেশ। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ১৫০০ জনকে পাঠাবেন। অবশ্যই তাঁদেরকে গ্রহণ করা হবে। মালদ্বীপে প্রবাসীদের যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য খাবার দেওয়া হয়েছে। আগামীতে আরো দেওয়া হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউএইতে যথেষ্ট প্রবাসী বাংলাদেশি আটকে আছেন। ইউএই সরকার সবাইকে বলছে নিয়ে আসতে। শুধু আমরা আনছি না, পাকিস্তান ও ভারত আনছে। ভারতের প্রায় এক লাখ ৯৭ হাজার কর্মীকে ইউএই থেকে ফেরত নেওয়ার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাঁরা আসতে চান অবশ্যই তাঁদের আমরা নিয়ে আসব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামীতে সবচেয়ে বেশি ফিরবে কুয়েত থেকে। সৌদি আরব কতজনকে পাঠাবে সে বিষয়ে সংখ্যা এখনো দেয়নি। তবে চার হাজার ২৬২ জনের আসার সম্ভাবনা আছে। তিনি বলেন, জর্দান থেকে কর্মী ফেরত আসার সম্ভাবনা আছে। ওমান থেকে এক হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি ফিরতে পারেন। লেবাননে অনেকে বেশ ঝামেলায় আছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিনা পয়সায় আনার চেষ্টা চলছে। কাতার থেকেও ফিরতে পারেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরাকে বড়সংখ্যক লোকের চাকরি চলে গেছে। তাদের কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায় তা আমরা ভাবছি।
প্রবাসীদের মরদেহ ফেরত আনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে কারো মৃত্যু হলে সৌদি আরব, ইউএই মরদেহ দেবে না। ইসলামী নিয়মে সেখানেই তাঁদের দাফন হবে। অন্য দেশগুলোতে করোনাভাইরাসে কেউ মারা গেলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচওর) গাইডলাইন অনুযায়ী কোয়ারেন্টিন সিস্টেমে পাঠাবে। সেই মরদেহ দেশে আনলেও আত্মীয়-স্বজন কেউ চেহারা দেখতে পারবে না। কারণ মরদেহের কোয়ারেন্টিন বক্স তৈরি করা হবে। বাক্স খোলা যাবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিবারগুলোতে বিষয়টি অনুধাবন করে করোনাভাইরাসে কারো মৃত্যু হলে বিদেশেই দাফনের বিষয়টি মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানান। মন্ত্রী বলেন, ফ্লাইট চলাচল শুরু হলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা চাইলে দেশে আসতে পারবেন। তবে সবাইকে ধৈর্য ধরে ওই দেশগুলোতে অবস্থানের অনুরোধ জানান। মন্ত্রী বলেন, সেখানে কয়েক মাস থাকার পর পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চয়ই কাজের সুযোগ আসবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে না খেয়ে মারা না যান, সে জন্য ইসলামী রাষ্ট্র, ন্যামসহ সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া তাঁদের চাকরিচ্যুত না করারও অনুরোধ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ‘কভিড-১৯ রিকোভারি ফান্ড’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে এবং সেখানে তহবিল জোগান দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০০ কোটি টাকার তহবিল গড়ে তুলেছে। প্রবাসীরা দেশে ফিরলে তাঁদের পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে।
বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এখন সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি ব্যক্তির প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি বাংলাদেশে আসার আগে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকেন বা ‘করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট’ নিয়ে আসেন তাহলে নিজের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনের সুযোগ দেওয়া হবে। নয়তো তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।