মিনহাজ হোসেন ইতালী থেকে : করোনা ভাইরাসের কারণে ইতালীতে অবৈধ অভিবাসীরা বৈধতা পাচ্ছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে কোয়ালিশন সরকারের দুই রাজনৈতিক দল ফাইভ স্টার মুভমেন্ট এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে আলোচনার পর ঐক্যমত হলে বৈধতার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। যেকোনো মুহূর্তে অধ্যাদেশ জারি হতে পারে।
তবে শুধুমাত্র দুটি সেক্টরে এই বৈধতা দেবার কারণে অনেক বাংলাদেশী এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। কৃষি কাজ এবং বাসাবাড়ির কাজ ও প্রবীণদের (কল্ফ ও বাদান্তে) দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত অবৈধ অভিবাসীরাই এ সুযোগ পাবে। দেশটির কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, এই ২ সেক্টরের বাইরে এই মুহূর্তে আমাদের বিবেচনায় অন্য কিছু নেই-মৌসুমী কাজের ভিসা নিয়ে আসা প্রায় ২ লাখ প্রবাসী শ্রমিক এখানে অবৈধ হতে পড়ে। করোনা ভাইরাসের কারণে কৃষিখাতে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়।
আগামী ১ জুন থেকে ১৫ই জুলাইর মধ্যে অবৈধ অভিবাসীরা বৈধতার জন্য আবেদন করে পারবেন। তবে চলতি বছরের ৮ মার্চের আগে থেকে যাঁরা কৃষিকাজ কিংবা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সেবাযত্ন ও বাসাবাড়ির ডমেস্টিক কাজ করছেন তাঁদের মালিকরা নিজ শ্রমিকের জন্য আবেদন করবেন। কাজের মালিক ছাড়াও শুধুমাত্র তাঁরাই আবেদন করতে পারবেন যাঁদের স্টে পারমিট ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবরের পর নবায়ন হয়নি। এই দুই ক্যাটাগরি ছাড়া বৈধতার ভিন্ন কোন সুযোগ নেই।
এক্ষেত্রে কাজের মালিকরা উপযুক্ত প্রমাণ সহ সরকারি ট্যাক্স ৪০০ ইউরো জমা দিয়ে ১ জুন থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন। কাজের কন্ট্রাক্ট যতদিনের করা হবে ঠিক ততো সময়ের জন্যই সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে স্টে পারমিট (পেরমেসসো দি সোজ্জর্নো) দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রফেসর জুসেপ্পে কন্তে’র ক্যাবিনেটে অনুমোদনের জন্য অধ্যাদেশ এভাবেই চূড়ান্ত হয়েছে।
অধ্যাদেশ মোতাবেক কাজের কন্ট্রাক্ট বা মালিক ছাড়াও আরেক বিশেষ ক্যাটাগরিতে অবৈধ অধিবাসীরা ইতালিতে এ যাত্রায় বৈধতার আবেদেনপত্র জমা দিতে পারবেন মাত্র ১৬০ ইউরো খরচায়। যাদের স্টে পারমিট (পেরমেসসো দি সোজ্জর্নো) ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবরের আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছিল, এই ক্যাটাগরিতে শুধুমাত্র তাঁরাই কাজ খুঁজে নেয়ার জন্য ৬ মাসের বিশেষ স্টে পারমিট পাবেন। কাজ খুঁজে পেলে তা পরিবর্তন করে নেয়া যাবে নর্মাল স্টে পারমিট হিসেবে। তবে এক্ষেত্রে শুধুমাত্র কৃষিকাজ কিংবা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সেবাযত্ন ও বাসাবাড়ির ডমেস্টিক কাজে যোগদান সাপেক্ষেই স্টে পারমিট পরিবর্তন করা যাবে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে প্রবাসীরা সন্তোষ প্রকাশ করলেও দালালদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তারা।
সর্বশেষ ২০১২ সালে ইতালীতে অবস্থানকারী অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করে নেয় সরকার। দীর্ঘ ৮ বছর পর দেশটিতে বৈধতার ঘোষণা আসলেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকের ভাগ্যই অনিশ্চিত রয়ে গেল।