ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: দীর্ঘদিন ধরে মুখ বন্ধ রাখার পর অবশেষে লন্ডনের স্ট্যানহোপ হাউসে নীরবতা ভাঙলেন নওয়াজ শরিফ। শুধু নীরবতা ভাঙলেন বললে ভুল হবে, পাকিস্তানের সামরিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাঁর জ্বালাময়ী বক্তব্য তুলে ধরলেন। নওয়াজের পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত সাংবাদিকরা তাঁকে ঘিরে ধরে। জানতে চায়, কী হতে চলেছে, কী এমন বলতে চলেছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী। তবে কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সোজা ভেতরে ঢুকে যান শরিফ, শুধু বলে যান ‘সময় হলেই জানতে পারবেন’। হাউসের ভেতরে একটি সবুজ পর্দার সামনে কাঠের ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছিল। সেখানেই বসেন নওয়াজ এবং ক্যামেরার সামনে তাঁর বক্তব্য পেশ করেন, ঐতিহাসিক -রাজনৈতিক বক্তব্য বলে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভেতরে কি চলছে তখন বাইরে থাকা সাংবাদিকরা অনুধাবন পর্যন্ত করতে পারেননি।
তবে চোয়াল শক্ত করে তাঁরা অপেক্ষা করছিলেন যদি কিছু খবর পাওয়া যায়। আধ ঘণ্টার বিবৃতিতে পাকিস্তানের ইমরান সরকার এবং যারা তাঁকে মসনদে বসিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন নওয়াজ। বাবার বক্তব্য শেষের পর সাংবাদিকদে মুখোমুখি হয়ে নওয়াজের ছেলে হুসেন বলেন, ‘সংগ্রামের এতো সবে শুরু, ইমরানের বিরুদ্ধে নয় বরঞ্চ সমান্তরাল প্রশাসনের বিরুদ্ধে’। সাংবাদিকরা হুসেনকে পাল্টা প্রশ্ন করেন- কবে দেশে ফিরছেন তাঁর বাবা , উত্তরে হুসেন বলেন, নওয়াজকে চুপ করিয়ে রাখার বিলাসিতা বেশি দিন চলবে না। তবে কি আইনের নির্দেশকে উপেক্ষা করার পথে হাটতে চলেছে শরিফ ? এমন প্রশ্ন উঠতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আরো কিছু বিস্ফোরক শোনার জন্য সাংবাদিকরা অপেক্ষা করছিলেন স্ট্যানহোপ হাউসের বাইরে। যদিও তাদের নিরাশ করেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী। নওয়াজের এই মৌনতাকে তাঁর নতুন কৌশল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ক্যামেরার সামনে কথোপকথনের সময়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে ভেতরে আসার অনুমতি দেয়া হয়েছিল । তবে বলে দেয়া হয়েছিল কোনো কথা যেন বাইরে না যায়, সবটাই থাকবে অফ দা রেকর্ড। সাংবাদিকদের মতে , এদিন নওয়াজ শরিফকে অনেক বেশি ফুরফুরে মেজাজের লেগেছে। যেন মাথা থেকে বড় কোনো বোঝা নেমে গেছে । পাশে থাকার জন্য গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পিএমএল-এন নেতা। বারবার তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে , যুক্তরাজ্যে তার সমর্থক এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিজেকে সংযুক্ত রাখবেন । নওয়াজের সঙ্গে দেখা করার জন্য কেউ কেউ ১২ ঘন্টা ধরে হাউসের বাইরে অপেক্ষা করেছেন যা দেখে স্থানীয়রা পর্যন্ত বিস্মিত হয়ে গেছেন। কৌতূহলী পথচারীরা একে আবার গণতন্ত্রের জয় বলে অভিহিত করেছেন। তবে ব্যাখ্যা যাই থাকে এদিন ক্যামেরার সবটুকু ফ্ল্যাশের ঝলকানি কেড়ে নিয়ে হিরো নওয়াজ শরিফ।