অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে ধর্ষণ, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা প্রার্থনা

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের ভিতরে লিবারেল সাবেক স্টাফার ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা ব্রিটানি হিগিনসকে (২৬) ধর্ষণ করার অভিযোগ করেছেন তিনি। তার দাবি, ২০১৯ সালে পার্লামেন্টে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিসে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টসহ দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। এ অভিযোগ যেভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে সে জন্য বিটানি হিগিনসের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। কিন্তু জবাবে বিট্রানি হিগিনস এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করার আহ্বান জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার অনলাইন নিউজ এবং বিবিসি। এতে বলা হয়, ধর্ষিত হওয়ার পর চাকরি হারানোর ফলে ঘটনার সময় কোনো কথা বলেননি ব্রিটানি। এ নিয়ে তিনি যখন সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন তখন বস পর্যায়ের কারো কাছ থেকে তেমন কোনো সমর্থন পাননি।

সোমবার এক টেলিভিশন সাক্ষাতকারে ব্রিটানি এ নিয়ে অভিযোগ প্রকাশ করেছেন। এর ফলে চারদিক হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, ব্রিটানি হিগিনসের অভিযোগে তার হৃদয় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তিনি পার্লামেন্টের পরিবেশ এবং সংস্কৃতি পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মঙ্গলবার ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের বলেন, আমি আশা করি ব্রিটানির ঘটনায় আমাদের সবাইকে জেগে উঠার আহ্বান রয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে তিনি কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন। কারণ, তিনি ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পর বলেছিলেন, তিনি দুটি কন্যা সন্তানের জনক। তাই এমন অভিযোগের বিষয় তিনি ভালভাবে বুঝতে পারেন।

ব্রিটানি হিগিনসের যে অভিযোগ

ঘটনার সময় মিস ব্রিটানি হিগিনসের বয়স ছিল ২৪ বছর। প্রতিরক্ষা ইন্ডাস্ট্রি বিষয়ক মন্ত্রী মিস লিন্ডা রেনল্ডসের অধীনে কয়েক সপ্তাহ আগে চাকরি নিয়েছেন। একদিন একটি গ্রুপের সঙ্গে তিনি ড্রিংকস নিতে যান। এই গ্রুপের ভিতর ছিল তাকে ধর্ষণকারী। সে একজন বয়স্ক পুরুষ সহকর্মী। ব্রিটানি হিগিনস বলেছেন, রাত বেশি হয়ে গেলে তাকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার প্রস্তাব করে ওই ব্যক্তি। কিন্তু তার পরিবর্তে সে তাকে নিয়ে যায় পার্লামেন্ট হাউজে। এ সময় ব্রিটানি হিগিনস ছিলেন নেশাগ্রস্ত। তাকে মন্ত্রীর অফিসে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম থেকে জেগেই দেখতে পান তাকে ধর্ষণ করছে ওই ব্যক্তি। তিনি নেটওয়ার্ক টেন’কে বলেছেন, ধর্ষণের মাঝামাঝি আমি জেগে যাই এবং চিৎকার করতে থাকি। তাকে থামতে বলি। হিগিনস বলেন, এরপর তাৎক্ষণিকভাবে চলে যায় ওই ব্যক্তি। এ বিষয়ে তিনি নিয়োগকারীদের জানান। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। হিগিনস মনে করেন, মিস রেনল্ডসের অফিস পরিস্থিতি ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছে। তার মানসিক ক্ষতকে খাটো করে দেখার চেষ্টা করেছে। হিগিনস বলেন, পরে আমার মনে হলো এটা একটা রাজনৈতিক সমস্যা। মিস রেনল্ডস আমাকে বললেন, তিনি আমাকে সাপোর্ট করবেন যদি আমি পুলিশে অফিযোগ করি। কিন্তু মিস রেনল্ডস পুলিশে অভিযোগ না দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। হয়তো তিনি ভেবেছিলেন, এতে তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। হিগিনস বলেন, মন্ত্রী রেনল্ডসের সঙ্গে যখন এ নিয়ে আলোচনা হয়, তখন সেই কক্ষে উপস্থিত ছিল ধর্ষণকারী। এতে আমার মধ্যে ভয় ও হতাশা জন্ম নেয়। মনে হতে থাকে এমন ঘটনা আরো ঘটতে পারে। এ ছাড়া যে ব্যক্তি আমাকে ধর্ষণ করেছে তাকে দলের একজন উদীয়মান তারকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাজনীতি ছাড়ার আগে স্কট মরিসনের লিবারেল পার্টির পক্ষে কাজ করতো সে।

Advertisement