তোপের মুখে লন্ডন পুলিশ

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: সারা ইভেরার্ড অপহরণ ও হত্যার ফলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত মানুষের সঙ্গে দক্ষিণ লন্ডনে পুলিশি আচরণে তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছে লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে নিন্দা উঠেছে রাজনৈতিক মহল থেকেও। নিন্দনীয় ঘটনার কারণে পুলিশ কমিশনার ডেম ক্রেসিডা ডিকের পদত্যাগ দাবি করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেট নেতা স্যার এডওয়ার্ড ডেভি। এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট চেয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। সারাহ ইভেরার্ড হত্যার ফলে শোকাহত ও ক্ষুব্ধ মানুষ শনিবার সন্ধ্যায় ক্ল্যাপহ্যাম কমনে যোগ দেন। এ সময় ওই অনুষ্ঠানে নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন নারীকে হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিতে দেখা যায় পুলিশ কর্মকর্তাদের। পুলিশ বলেছে, জননিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার জন্য তারা এদিন চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

৩৩ বছর বয়সী সারাহ ইভেরার্ডের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে করোনা বিধিনিষেধ সত্ত্বেও ক্ল্যাপহ্যাম কমনে এদিন রাতে সমবেত হয়েছিলেন কয়েক শত মানুষ। এ জন্য একটি গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। তার নাম রিক্লেইম দিজ স্ট্রিটস। তারা বলেছে, পুলিশি আচরণে ক্ষুব্ধ তারা এবং একই সঙ্গে মর্মান্তিকভাবে বেদনাহত। পুরুষ পুলিশের সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যোগ দেয়া নারীদের শারীরিকভাবে মোকাবিলা করার জন্য তারা পুলিশ বাহিনীর কড়া সমালোচনা করেছে। গ্রুপটি এক বিবৃতিতে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, তাদের দায়িত্ব হলো জনশৃংখলা রক্ষা করা, জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং প্রতিবাদের অধিকার রক্ষা করা। কিন্তু ওই রাতে তারা এর সবটাতেই ব্যর্থ হয়েছে।

জবাবে মেট্রোপলিটন পুলিশ বলেছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এটা শুধু তাদের দায়িত্বের অধীনে ছিল। তবে এ থেকে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করা যায় কিনা তা পর্যালোচনা করে দেখবে পুলিশ বাহিনিী। অনলাইনে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন নারীকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিচ্ছে পুলিশ কর্মকর্তারা। তখন প্রত্যক্ষদর্শীদের বলতে শোনা যায়, শেম অন ইউ। তাদেরকে ছেড়ে দাও। কিন্তু ভিডিওতে দেখা যায়, তাদেরকে একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর নিন্দা জানিয়ে টুইট দিয়েছেন স্যার এডওয়ার্ড ডেভি। তিনি বলেছেন, লন্ডনের লাখ লাখ নারীর আস্থা হারিয়েছেন ডেম ক্রেসিদা। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে তা তলব করেছেন প্রীতি প্যাটেল। একই সঙ্গে কি ঘটেছিল তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তিনি চেয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে। লন্ডনে লেবার দলের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, এমন দৃশ্য অগ্রহণযোগ্য। তাই তিনি পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে জরুরি ভিত্তিতে একটি ব্যাখ্যা দাবি করেছেন। অন্যদিকে লেবার নেতা স্যার কিয়ের স্টরর্মার বলেছেন, এই ঘটনা গভীরভাবে হতাশাজনক। নারীরা নিহত সারাহ ইভেরার্ডের প্রতি শোক জানাতে সমবেত হয়েছিলেন। তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে তা করতে দেয়া উচিত ছিল। এই বিক্ষোভে পুলিশ যেভাবে হস্তক্ষেপ করেছে তা মোটেও উচিত হয়নি। কমন্স ওমেন অ্যান্ড ইকুয়ালিটিজ সিলেক্ট কমিটির চেয়ার রক্ষণশীল এমপি ক্যারোলাইন নোকস। তিনি বলেছেন, ক্ল্যাপহ্যাম কমনের ঘটনায় তিনি সত্যিকারভাবে হতাশাগ্রস্ত।

Advertisement