যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো (৬৩) বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির প্রমাণ মিলেছে। তিনি এখন পর্যন্ত অন্তত ১১ নারীকে জোরপূর্বক চুম্বন বা যৌন ইঙ্গিতমূলক মন্তব্য করেছেন।যৌন হয়রানির অভিযোগে গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগে পাঁচ মাসের তদন্তের ফলাফলে দেখা গেছে যে গভর্নর একটি ‘বিষাক্ত’ কর্মস্থল তৈরি করেছেন। জনসম্মুখে প্রথম অভিযোগ উত্থাপনকারীর বিরুদ্ধে তার অফিস অবৈধভাবে প্রতিশোধ নেয়।অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমসের প্রতিবেদন প্রকাশের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও শীর্ষ ডেমোক্রেটরা তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।
হোয়াইট হাউসে জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি মনে করি তার পদত্যাগ করা উচিত। আমি নিশ্চিত যে কিছু আলিঙ্গন সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিল। কিন্তু স্পষ্টতই অ্যাটর্নি জেনারেল এমন কিছু পেয়েছেন যা গ্রহণযোগ্য নয়।অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় বলেছে, তদন্তে দেখা গেছে কুয়োমো ও তার সিনিয়র উপদেষ্টাদের পদক্ষেপগুলো ‘একাধিক রাজ্য ও ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করেছে।’যদিও এক ভিডিয়ো বার্তায় কুয়োমো এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে স্পষ্ট করেন যে তার পদত্যাগ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।২০১১ সাল থেকে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা এই ডেমোক্রেটিক গভর্নর এই প্রতিবেদন যথাযথ নয় ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে উল্লেখ করেন।তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা তার কথা, অঙ্গভঙ্গি ও আচরণের ভুল ব্যাখ্যা করেছে। নারীদের প্রতি তার আচরণ আন্তরিকতা প্রকাশের উদ্দেশ্য ছিল।
তদন্তে তাকে দ্রুত জনপ্রিয়তা হারানো এক গভর্নর হিসেবে চিহ্নিত করে, যিনি করোনা মহামারির শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন।ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় থাকা কুয়োমোর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি ১৬৮ পৃষ্ঠার বিশাল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।এই তদন্ত প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন নথি নিরীক্ষাসহ ১৭৯ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে তদন্ত কমিটি। তার ভিত্তিতে জানা গেছে, অঙ্গরাজ্যের অনেক নারী কর্মীকে বাজেভাবে স্পর্শ করাসহ উদ্দেশ্যপূর্ণ মন্তব্য করতেন গভর্নর।এর আগে নিউইয়র্কের এই গভর্নরের বিরুদ্ধে অন্তত সাত নারী লিখিতভাবে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন। তার প্রেক্ষিতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি কাজ করে রিপোর্ট দিয়েছে। সেখানেই কোয়ামো যে যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িত তার প্রমাণ মিলেছে।সূত্র : রয়টার্স