সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে হেরে অস্ট্র্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ। তবে এখন জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে চায় টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়েই আজ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে টাইগাররা। অন্যদিকে সিরিজ হারলেও জয় দিয়ে সফর শেষ করতে চায় অস্ট্রেলিয়াও।আজ সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে গাজী টিভি এবং টি স্পোর্টস চ্যানেলে। যদিও ম্যাচটি অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে বৃষ্টির বাগড়া।এর আগে প্রথম তিন ম্যাচ জিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো কোনো সিরিজ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার ড্যান ক্রিশ্চিয়ানের ব্যাটিং নৈপূণ্যে ৯ উইকেটে ১০৪ রান করেও চতুর্থ ম্যাচটি জিততে পারেনি বাংলাদেশ। যদিও ১২তম ওভার শেষে ৬৫ রানে ৬ উইকেট পতনে বিপদেই পড়েছিলো অজিরা।কিন্তু সাকিব আল হাসানের এক ওভারে পাঁচটি ছক্কায় ৩০ রান তুলে অস্ট্রেলিয়াকে জয় পাইয়ে দিতে ভূমিকা রাখেন ক্রিশ্চিয়ান। মাত্র ১৩ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই অজি ব্যাটার। যার ফলে প্রথম তিন ম্যাচে টানা হারের পর চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে চলতি বাংলাদেশ সফরে প্রথম জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
চতুর্থ ম্যাচটি হারলেও জয় দিয়েই সিরিজটি শেষ করতে চায় টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ শেষ করতে পারাটা বাংলাদেশের স্মরণীয় হয়ে থাকবে।এ বিষয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘রান তাড়া করাটা সব সময়ই কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা প্রথমে ব্যাটিং করার জন্য উইকেটের মূল্যায়ন করিনি। এটি ১২০ টার্গেটের উইকেট ছিল। তারপরও বোলাররা ১৯তম ওভার পর্যন্ত ম্যাচটি নিয়ে গেছে।’তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু ব্যাটসম্যান হিসেবে আমাদের সতর্ক ও দায়িত্বশীল হতে হবে। চতুর্থ ম্যাচের উইকেটটি সবচেয়ে কঠিন ছিল। ড্যান ক্রিশ্চিয়ান পুরো দৃশ্যপট বদলে দিয়েছেন, কিন্তু টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমনটা হতেই পারে।’
চতুর্থ ম্যাচ জিততে পারলে দ্বিপাক্ষিক মোকাবেলায় জয়ের দিক দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সমান হতে পারতো বাংলাদেশ। তবে আটবারের মোকাবেলায় অস্ট্রেলিয়া এখন পর্যন্ত পাঁচটি ম্যাচ জিতেছে এবং বাংলাদেশের জয় তিনটিতে। শেষ ম্যাচটি জিতলে তাই ব্যবধান হবে ৫-৪।এদিকে, ফর্মহীনতার কারণে চতুর্থ ম্যাচের দল থেকে সৌম্য সরকারের বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকলেও, গত চার ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। তবে একাদশে থেকেও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি বাঁহাতি ওপেনার। শেষ চার ম্যাচে সৌম্যের স্কোর ২, ০, ২ ও ৮। মোট ১২ রান।স্লো পিচে চলা সিরিজে কোনও ব্যাটসম্যানেরই রেকর্ড ভালো ছিলো না। সেটির প্রমাণ পাওয়া গেছে স্ট্রাইক রেটেই, সিরিজে খেলা ২২ ব্যাটসম্যানের মধ্যে মাত্র সাতজনের স্ট্রাইক রেট একশোর উপরে।
কিন্তু যেভাবে চার ম্যাচে আউট হয়েছেন সৌম্য, এতে তার মানসিক স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আজ যদি সেরা একাদশ থেকে বাদ পড়েন, তবে তা আশ্চর্যজনক হবে না।এদিকে, পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হিসেবে সর্বনিম্ন রানের সিরিজ হবার পথে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার সিরিজটি। সিরিজের প্রথম চার ম্যাচে উঠেছে ৯৩৬ রান। এরমধ্যে দুই ম্যাচেই রান রেট ছিল ৬-এর নিচে।এর আগে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে সর্বনিম্ন রান ছিল ১৫৯৪। যা হয়েছিল এ বছরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার সিরিজে। এবার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে নয়া রেকর্ডের মালিক হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। সেইসঙ্গে একই ভেন্যুতে আজকের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে স্কোরের উন্নতি না হলে, প্রথমবারের মতো সিরিজে মোট রান রেট ছয়ের কম হবে। বর্তমানে সিরিজে রান রেট ৫ দশমিক ৮৬।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে এক ওভারে পাঁচটি ছক্কা হাঁকানো ক্রিশ্চিয়ান বলেন, ‘আমি আমার ক্যারিয়ারে যা কিছুর সম্মুখীন হয়েছি, কোনও কিছুর সাথে তার তুলনা চলে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য আমি কঠিন কন্ডিশন দেখেছি। ১২০ রান ১৯০-এর মতো, চেষ্টা করা এবং ব্যাট করা জন্য এটি অনেক কঠিন জায়গা। আমরা সব স্পিনার এবং এমনকি পেসারদেরও দেখেছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধীর গতির বোলিং শুরু করে তারা। এটা সত্যিই, সত্যিই কঠিন কাজ।ক্রিশ্চিয়ান আরও বলেন, ‘ব্যাটিং-এ পারফরমেন্সের মাধ্যমে অবশ্যই আমরা এসব ম্যাচ থেকে বেরিয়ে আসতে পারি। এই পরিস্থিতিতে আপনার পরিকল্পনায় আপনাকে অবিচল হতে হবে। এখানে সম্ভবত, বিশ্বের যে কোনো পর্যায়ের চেয়ে এই ধরনের বোলিংয়ের মুখোমুখি হওয়া বেশি কঠিন নয়।টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, এখন পর্যন্ত ১০৬টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে জয় ৩৭টি। টাইগাররা হেরেছে ৬৭টি ম্যাচে। দু’টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। পরিসংখ্যান বিবেচনায়, অস্ট্রেলিয়ানদের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে সংখ্যাটি উন্নতি করার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ।
