রমজানের প্রথম দিন রোববার অনেকেই ঘরে তাদের ইফতারির আয়োজন পূর্ণ করতে পারেননি। দেশজুড়ে গ্যাসের তীব্র সংকটের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শুধু বাসা বাড়িতেই নয়, গ্যাস না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে রপ্তানিমুখী অনেক শিল্পকারখানার উৎপাদন। সরবরাহ কমে যাওয়ায় কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, বহুজাতিক কোম্পানি শেভরনের মালিকানাধীন বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র সংস্কারের কারণে এই সংকট দেখা দিয়েছে। তবে আজকালের মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে পেট্রোবাংলা। যদিও একটি সূত্র জানিয়েছে, গ্যাসের এ সংকট আরও সপ্তাহখানেক থাকতে পারে।হঠাৎ করে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে রাজধানীর অধিকাংশ এলাকাতেই রোববার চরম সংকট দেখা দেয়। প্রথম রমজানে ইফতার তৈরিসহ রান্নার কাজে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা।
রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ, জিগাতলা, শ্যামলী, কল্যাণপুর, আগারগাঁও, শ্যাওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর, কাফরুল, আদাবর, বনশ্রী, রামপুরা, বসুন্ধরা আবাসিক, আজিমপুর, লালবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, গ্রিন রোড, মতিঝিল, সেগুনবাগিচা, নারিন্দা, ওয়ারিসহ পুরাণ ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকা এবং মিরপুর ১, ২, ১০ নম্বর এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার সকাল থেকেই তারা গ্যাস সংকটে পড়েছেন।গ্যাস না থাকায় বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে ইফতার করেছেন এইসব এলাকার অধিকাংশ মানুষ।জানা যায়, দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস উৎপাদনকারী বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের সরবরাহ লাইনে হঠাৎ বালুর উপস্থিতির কারণে শনিবার রাত দেড়টার দিকে ছয়টি কূপের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়।এদিকে গ্যাস সংকটের কারণে কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও। গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কমপক্ষে ১৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন থাকলেও পেট্রোবাংলা সরবরাহ করে ১১০ থেকে ১১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস। রোববার আরও ৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম দেওয়া হয় বিদ্যুতে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গ্যাস সংকটের কারণে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হয়েছে।পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান গণমাধ্যমকে বলেন, “শেভরন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। সন্ধ্যার মধ্যে একটি কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়েছে। আশা করি সোমবার দিনের মধ্যে সংকট কমে আসবে।এ বিষয়ে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের স্বল্প চাপ দেখা দিয়েছে। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আশা করা যাচ্ছে। আরও বলা হয়, গ্যাস সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে কোনো কোনো এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।