রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাকে সংযুক্ত করে রোববার (২৬ জুন) থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতু। প্রকৌশলী ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ যা অর্জন করেছে; ভবিষ্যতে তা হতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম বড় সম্পদ। ফলে সফলভাবে নির্মাণ কাজ সম্পন্নের পর এখন পদ্মা সেতু যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের বিকল্প নেই।উদ্বোধনের পরদিন থেকেই পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলবে, সেজন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। রোববার সকাল ৬টা থেকেই সব ধরনের যানবাহন সেতুতে উঠতে পারবে বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম।শনিবার সকালে স্বপ্নের এই সেতু উদ্বোধনের পর তিনি বিকালে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আজ সেখানে কোনো যানবাহন চলাচল করবে না। রোববার সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।”
ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এই পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হল। এই ২১টি জেলার মাওয়া রুট ব্যবহারকারী বাসসহ যানবাহনগুলো এতদিন ফেরিতে পারাপার করত। যেগুলোর সবই এখন থেকে চলবে সেতুর উপর দিয়ে।এদিকে, পদ্মা সেতু নিয়ে জনমানুষের ব্যাপক আগ্রহ থাকায় রোববার স্বভাবতই ভিড় হবে বলে ধরে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, “শুরুর দিন যানবাহনের ব্যাপক চাপ হবে বলে আমরা ধারণা করছি। আমাদের টোলপ্লাজার কর্মীদেরও সেভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আশা করছি, তারা ভিড় সামলাতে পারবে। এছাড়া সেতু রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্যও সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া আছে।এর আগে শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করে টোল পরিশোধ করে প্রথম পদ্মা সেতু পার হন। পদ্মাসেতু পার হওয়ার সময় গাড়ি বহরের জন্য ১৬ হাজার ৪০০ টাকা টোল দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে তিনি নিজের গাড়ির জন্যই টোল দিয়েছেন ৭৫০ টাকা।সেতুতে টোলের হার ইতোমধ্যে নির্ধারিত হয়েছে। ছোট বাস ১৪০০ টাকা, মাঝারি বাস ২০০০ টাকা এবং বড় বাসকে ২৪০০ টাকা টোল দিতে হবে। ছোট ট্রাকের টোল ১৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে ২১০০-২৮০০ টাকা, বড় ট্রাকে ৫৫০০ টাকা। পিকআপের টোল ১২০০ টাকা।
কার ও জিপের টোল ধরা হয়েছে ৭৫০ টাকা, মাইক্রোবাসে ১৩০০ টাকা। মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হতে চাইলে টোল দিতে হবে ১০০ টাকা।পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী বেশিরভাগ পরিবহনের বাস ছেড়ে যাবে ঢাকার সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে।বৃহ্ত্তর দক্ষিণবঙ্গ কোচ ও বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শনিবার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সায়েদাবাদ থেকে আগে যেসব বাস ছেড়ে যেত রোববারও সেগুলো ছেড়ে যাবে।তিনি বলেন, “আমাদের এদিক থেকে চলাচলকারী বাসগুলো বন্ধ ছিল অনেকদিন। সেই সব বাসই চালু হবে। এছাড়া হানিফ, গ্রিনলাইনসহ কয়েকটি পরিবহনের বাসও যাওয়ার কথা রয়েছে।”গ্রিনলাইন পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক মো. আবদুস সাত্তার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পদ্মা সেতু হয়ে সাতক্ষীরা, বেনাপোল, খুলনা, যশোর, বরিশাল ও কুয়াকাটায় যাবে তাদের পরিবহনগুলো।তিনি বলেন, আমাদের সবগুলো গাড়িই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। রুট পারমিট নেয়া ছিল, রোববার সকাল থেকেই আমরা এই রুটে বাস চালাব।