ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (৪৭) নামে মসজিদের এক ইমামের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তার লাশ উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের গোবিন্দরায় দেবত্তর গ্রামের একটি আম গাছ থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ একই ইউনিয়নের মহিপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত. ইসমাইল হোসেনের ছেলে ও পার্শ্ববর্তী পলাশবাড়ী উপজেলার দুর্গাপুর গাবেরদিঘি এলাকার জামে মসজিদের পেশ ইমাম ছিলেন।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি মাসুদ রানা জানান, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়ানোর জন্য বেলা ১১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে দুর্গাপুর গাবেরদিঘি এলাকার উদ্দেশে রওনা হন। তারপর থেকে তার আর কোন সন্ধান পওয়া যাচ্ছিল না। আজ শনিবার ভোরে এলাকাবাসী তার বাড়ির অদূরে ওই গ্রামের একটি আম গাছের ডালের সাথে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
আরও পড়ুন: কটিয়াদী উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা, মোটরসাইকেলে আগুন
নিহত ইমামের বড় মেয়ে ফতেমা বেগম ও তার স্ত্রী লাবনী বেগমের অভিযোগ, প্রায় ৮মাস আগে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ অভাবে পরে বন্ধুত্ব সম্পর্কের কারণে পলাশবাড়ী উপজেলার উদয়সাগর এলাকার দাদন ব্যবসায়ী শাহারুলের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নেন। কিছুদিন আগে সেই টাকা পরিশোধও করেন। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারেন তাকে ওই টাকার সুদ দিতে হবে। গত বুধবার সুদের টাকার জন্য তাদের বাড়িতে শাহারুল তার সহযোগী শরিফুল ও মিলনসহ আসেন। তারা সুদের টাকা প্রদানের জন্য আবুল কালামকে চাপ দেয়। কিন্তু তিনি সুদের টাকা দিতে অপারগতা জানান। এতে দাদন ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
তারা আরও জানান, দুর্গাপুর গাবেরদীঘি এলাকায় জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়াতে যাবার জন্য ইমাম আবুল কালাম শুক্রবার বেলা ১১টায় বাড়ি থেকে রওনা হন। কিন্তু সেখান থেকে বিকাল পযর্ন্ত বাড়িতে ফিরে না আসায় তারা খোঁজ নিয়ে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান। এরপর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন জামে মসজিদে যাবার পথে ওই দাদন ব্যবসায়ীরা তাকে তুলে নিয়ে গেছে। বিষয়টি ওই রাতেই পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম মণ্ডলকে জানানো হয়।
তাদের দাবি, ওই দাদন ব্যবসায়ীরাই ইমাম আবুল কালামকে মেরে ফেলে লাশ বাড়ির অদূরে আম গাছে লাশ ঝুলে রেখে গেছে। তার পরিবার এই হত্যার বিচার চান।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম মণ্ডল জানান, বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিকভাবে পলাশবাড়ী থানার ওসিকে মোবইল ফোনে জানান।
পলাশবাড়ী থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম মণ্ডলের নিকট মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানতে পেরে রাতেই সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে ইমাম আবুল কালাম ও দাদন ব্যবসায়ী শাহারুলের কোন সন্ধান পাননি।
তবে সাদুল্লাপুর থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, ময়নাতদন্তের রির্পোট না পাওয়া পর্যন্ত তার এই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করা যাচ্ছে না।