ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: ভারতের সব মানুষ আইনের সাহায্য নেওয়ার সুযোগ পান না। বিশেষত সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্টে মামলা লড়া এতটাই খরচসাপেক্ষ যে, তা গরিব এবং মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। শনিবার রাজস্থানের যোধপুরের এক অনুষ্ঠানে এই নিয়ে প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। শুক্রবার হায়দরাবাদ গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের মৃত্যু হয়েছে হায়দরাবাদ পুলিশের এনকাউন্টারে। তা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির এই পর্যবেক্ষণ ও মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
শনিবার রাজস্থানের যোধপুরে রাজস্থান হাই কোর্টের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি। ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদে, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদও। প্রধান বিচারপতি এই অনুষ্ঠানে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখার কথা বলেন। তিনি স্পষ্টই বলেন যে, প্রতিহিংসা থেকে কখনও ন্যায়বিচার হবে না। পাশাপাশি, ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তিতেত আরও দ্রুতগতি আনা উচিত বলেও তিনি মনে করেন। প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্যের পর একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘বিচারব্যবস্থা ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে পড়েছে। গরিব-মধ্যবিত্ত মানুষের নাগালের বাইরে। বিশেষত, হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে। নানা কারণ আছে তার পিছনে। কিন্তু সাধারণ মামলাকারীরা উচ্চ আদালতে পৌঁছতেই পারেন না। আজ কোনও গরিব বা বঞ্চিত মানুষ হাই কোর্টে আসতে পারেন? কারণ, সংবিধানের প্রস্তাবনায় আমরা সকলেই জানি যে সবারই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সেখানে দাঁড়িয়ে এই প্রশ্নটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বিচারব্যবস্থায় খরচ বৃদ্ধির বিষয়ে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বলে এদিন স্মরণ করিয়ে দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি জানান, গরিবের স্বার্থরক্ষাই গান্ধীজির কাছে সবসময় অগ্রাধিকার পেত। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি প্রয়াত কিংবদন্তি আইনজীবী অশোক সেনের কথাও উল্লেখ করেন রামনাথ কোবিন্দ। তিনি এও জানান, পেশাগত জীবনে তিনি নানা ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু সবাই যাতে ন্যায়বিচার পান, সেটাই তার মূল লক্ষ্য ছিল। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, আইনজীবী অশোক সেনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের জ্ঞানবৃক্ষের ফল দরিদ্রদের কাছে পৌঁছে দেবেন। সুপ্রিম কোর্টের রায় এবার থেকে দেশের ন’টি আঞ্চলিক ভাষায় দেয়া হবে, এই ব্যবস্থা হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে।