ইউকের মসজিদগুলোর জন্যে সিকিউরিটি ফান্ড বৃদ্ধির দাবী

ব্রিটবাংলা ডেস্ক : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে গত শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায়ের সময় মুসল্লিদের উপর কট্টরপন্থি সাদা সন্ত্রাসীর হামলার পর ইউকের মসজিদগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিদে ফান্ড বৃদ্ধি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন সংক্ষেপে এমসিবি।

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলার পরপরই ১৫ মার্চ, শুক্রবার বাদ জুম্মা লন্ডনে ইস্ট লন্ডন মসজিদ ও লন্ডন মুসলিম সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বেথনালগ্রীণ এন্ড বো আসনের এমপি রুশানারা আলী, লন্ডন মেয়র সাদিক খানসহ অন্যান্য ধর্মের নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলন শেষে মসজিদের বাইরে বিরাট র‌্যালি হয়। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন লন্ডন মেয়র সাদিক।

এমসিবির সেক্রেটারী জেনারেল হারুন খান বলেছেন, নিউজিল্যান্ডের ঘটনায় প্রভাবিত হয়ে বৃটেনের মসজিদ বা ইসলামি সেন্টারে হামলার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় এ নিয়ে মুসলিম কমিউনিটিতে এক ধরনের ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এই ভীতি দুর করার জন্যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রীর থেরিজা মে’র কাছে চিঠি লিখবেন বলেও জানিয়েছেন এমসিবি সেক্রেটারী।
উল্লেখ্য এন্টি সেমিটিক হামলা বেড়ে যাওয়ায় ব্রিটেনের জুইশ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে সিকিউরিটি ফান্ডিং বৃদ্ধি করেছে সরকার। ব্রিটেনের প্রায় ৪শ সিনেগগ এবং ১৫০টি জুইশ স্কুলের জন্যে ১৪ মিলিয়ন পাউন্ড অতিরিক্ত সিকিউরিটি ফান্ড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। একেকটি প্রতিষ্ঠান পাবে ২৫ হাজার পাউন্ড করে।

এমসিবির সেক্রেটারী জেনারেল হারুন খান

নিউজিল্যান্ডের ঘটনার পর ইউকের মসজিদগুলোতে শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে মুসলিম কমিউনিটির প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তার নিশ্চিতের জন্যে জুইশ কমিউনিটির মতো সমান সমর্থনের জন্যে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এমসিবি সেক্রেটারী জেনারেল।
হারুন খান বলেছেন, ইউকেতে ৫২ শতাংশ ধর্ম ভিত্তিক হেইট ক্রাইমের মধ্যে মুসলিম বিদ্বেষী ঘটনা সবচাইতে বেশি। অথচ জুইশ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে সরকারী সিকিউরিটি ফান্ড এক রকম বন্ধ করেই দেওয়া হয়েছে। গত তিন বছরে মাত্র ২ দশমিক ৪ মিলিয়ন পাউন্ড সিকিউরিটি ফান্ড বিতরণ করা হয়েছে। এই ফান্ড যদি শুধু মুসলিম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে বিবেচনা করা হয়, তাহলে একেকটি প্রতিষ্ঠান পাবে ৫শ পাউন্ডেরও কম ।
ধর্মীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি অন্যান্য কমিউনিটি সেবা প্রদানের জন্যে একেকটি মসজিদ বা প্রতিষ্ঠানকে সপ্তাহে সাতদিন খোলা রাখতে হয়। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের হামলার পর খোলা রাখা হলেও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে ইউকের মসজিদগুলো।

https://britbangla24.com/news/73923

১৫ মার্চ, শুক্রবার জুম্মার সময় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর এবং লিনউড মসজিদে শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীর গুলিতে শিশুসহ ৫০ জন নিহত হন। এই হামলা থেকে অন্যান্য মুসলিম এবং ইমিগ্র্যান্ট বিরোধী কট্টরপন্থিদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে হামলার সময় সন্ত্রাসী তার ফেইসবুকে হামলার চিত্র লাইভ সম্প্রচার করে। যদিও এসব ভিডিও চিত্র সামাজিক মাধ্যম থেকে মুছে ফেলার নির্দেশ দিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের হামলার পরপরই ইউকের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
সর্বশেষ গত শনিবার রাতে সাউথ ইস্ট ইংল্যান্ডের সারিতে ১৯ বছর বয়সী এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে এক শ্বেতাঙ্গ। এ সময় বেইসবল ব্যাট দিয়ে কিছুও গাড়িও ভাঙচুর করে হামলাকারী। হামলার সময় সে চিৎকার করে বিভিন্ন ধরনের বর্ণ বিদ্বেষী মন্তব্য করছিল। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, নিউজিল্যান্ডের ঘটনায় প্রভাবিত হয়েই সারির হামলা চালানো হয়েছে। তাই এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা বিবেচনায় নিয়ে তদন্তু শুরু করেছে পুলিশ। এর আগে গ্রেটার ম্যানচেষ্টারের রচডেল এবং ওল্ডহ্যামে পৃথক দুটি বর্ণবাদী ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement