এমডি রিয়াজ হোসেন, ইতালীঃ বাংলাদেশ সমিতি ইতালীর আসন্ন নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পরপরই হিসাব নিকাশে বসছে রোম কমিউনিটির সর্ব স্তরের নেতৃবৃন্দ। কে হবেন আগামী দিনের রোমের বাংলা কমিউনিটির অভিভাবক?
দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে থাকা বাংলাদেশ সমিতি ইতালীর কার্যক্রম বেগবান করার লক্ষে গত তিন মাস পূর্বে গঠন করা হয় নির্বাচন কমিশন। একাধিক অঞ্চল ভিত্তিক আলোচন সভা শেষে গত ৮ অক্টোবর নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করা হয়। আগামী ৩রা ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারন করে কমিশন। তফসিল অনুযায়ী সদস্য সংগ্রহ চলবে আগামী ১২ই নভেম্বর পর্যন্ত।
প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ ও জমা ১৩ই নভেম্বর। মনোনয়ন পত্র বাছাই ১৪ই নভেম্বর থেকে ১৫ই নভেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার ১৬ই নভেম্বর থেকে ১৭ই নভেম্বর রাত ১০টা পর্যন্ত। ৩রা ডিসেম্বর সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন চলবে। তফসিল ঘোষনার পরপরই প্রার্থীরা অঞ্চল ভিত্তিক আলোচনা শুরু করেছে। রোম কমিউনিটির প্রবীন অনেকেই নির্বাচন কমিশনে রয়েছে। অন্য দিকে অনেকে আগে থেকেই লন্ডন চলে যাওয়ায় একাধিক প্রার্থী না হলেও নির্বাচন জমে উঠবে বলে অনেকের ধারনা। গত তের বছর ছিল মেয়াদবিহীন কমিটি। এ নিয়ে কমিউনিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ছে অনেক আগে থেকেই। বাংলাদেশ সমিতি ইতালীর সভাপতি জি এম কিবরিয়া বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে চলে গেলে ২০০৬ সাল থেকে ঝিমিয়ে পরে কার্যক্রম। বাংলাদেশ সমিতির নামে মাত্র বিভিন্ন যায়গায় ব্যবহৃত হলেও কাজে ছিল জিরো। যে বাংলাদেশ সমিতি ইতালী প্রবাসীদের অধিকার আদায়ের প্রধান সংগঠন ছিল সেই সংগঠনের নোংরামির কারনে কমিউনিটি বড় হলেও সাধারন প্রবাসীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল নেতাদের কাছ থেকে। দীর্ঘদিন পরে হলেও আবার ঘুরে দাড়াতে চায় বাংলাদেশ সমিতি ইতালী। দুই একজন নিজেদের প্রার্থীতা প্রকাশ করলেও অনেকেই রয়েছে নিজ এলাকার মুরব্বিদের মুখের দিকে তাকিয়ে। কেউ রয়েছে নিজ এলাকার লোকদের ভোটার তালিকায় নাম উঠানোর ব্যস্ততায়।সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে সভাপতি পদে একাধিক প্রার্থী ঘোষনা দিলেও শেষমেশ অনেকেই সাধারন সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে পারে। আবার এখন প্রার্থী থাকলেও শেষে প্রত্যাহার করে নিবে অনেকেই এমনও হতে পারে। সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান সভাপতি জি এম কিবরিয়া। তবে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই জানাননি তিনি।বরিশালবাসীরা তার কাছ থেকে কিছুই জানতে পারেনি এখন পর্যন্ত। তবে অনেকেই বলছে বাংলাদেশ সমিতিকে আবারো বেগবান করতে হলে জিএম কিবরিয়াকেই দায়িত্ব নিতে হবে । তবে নির্ভর করছে তার নিজের উপর সে রোমে স্থায়ীভাবে থাকবে কি থাকবে না। অন্য দিকে সভাপতি পদে প্রার্থী হতে ইতালী আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বাংলাদেশ সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি হাসান ইকবাল, বরিশাল বিভাগ সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম মাঝি, বৃহত্তর ফরিদপুর সমিতির সাধারন সম্পাদক , রোম মহানগর বিএনপির সভাপতি হুমায়ন কবির, ইতালীর শরিয়তপুর জেলা সমিতির সভাপতি আঃরব ফকির,সাধারন সম্পাদক আফতাব বেপারী। হাসান ইকবাল বলেন, সময় বলে দিবে কে কি সিদ্ধান্ত নিবে। হুমায়ন কবির বলেন, আমরা ভোটার তালিকা নিয়ে ব্যস্ত আছি । বৃহত্তর ফরিদপুর থেকে প্রার্থী থাকলে সেখানে আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তে পৌছব। তবে এটা সত্য প্রার্থী হলে ভোটারদের ম্যনডেট নিয়ে জয়ী হব ইনশল্লাহ। আঃরব ফকির বলেন, বৃহওর ফরিদপুর সমিতির কমিটি গঠনের সময় একটি সিদ্ধান্ত নেয়া ছিল শরিয়তপুর তথা বৃহওর ফরিদপুর থেকে কে হবে বাংলাদেশ সমিতির প্রার্থী । সেই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন চাই। তারপরও শরিয়তপুরের মুরব্বিরা যেটা বলবে সেটা সকলের মেনে নেওয়া উচিত। সর্বশেষ এইটুকু বলব কমিউনিটির সেবায় কাজ করতে চাই। আফতাব বেপারী বলেন, সভাপতি পদে নির্বাচন করতে চাই শক্তিশালী প্যানেল নিয়ে । রোম প্রবাসীরা চাইলে আমি সভাপতি হব ইনশল্লাহ। নজরুল ইসলাম মাঝি বলেন, আমাদের সকলের মুরব্বি ,বাংলাদেশ সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জি এম কিবরিয়া ভাই যদি সভাপতি পদে নির্বাচন করে তাহলে হিসাব এক না করলে হিসাব অন্য। সময় হলে সব কিছু জানাব। সভাপতি পদে একাধিক প্রার্থী হলেও সাধারন সম্পাদক এখন পর্যন্ত একজন ছাড়া কেউ জোরেসোরে নামেনি। কুমিল্লা জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি,কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দীন মোহাম্মদ দিনু সাধারন সম্পাদক প্রচার প্রচারনায় এগিয়ে রয়েছে।ভোটার তালিকা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে তিনি। আঞ্চলিক নেতাদের সাথে ছোট খাট বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছে।তবে কেউ বলছেন জি এম কিবরিয়া প্রার্থী হলে হিসাব নিকাশ উল্টে যাবে। সভাপতি নয় সাধারন সম্পাদক পদে নির্বাচন করবে অনেকে। এ দিকে সাধারন সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে পারে বরিশালের কৃতি সন্তান ,ইতালী আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এম এ রব মিন্টু। যুবকদের পছন্দের প্রার্থী তিনি। বরিশাল থেকে সভাপতি পদে কেউ প্রার্থী না হলে সাধারন সম্পাদক পদে তিনি নির্বাচন করবে এমটাই আভাস পাওয়া গেছে। এ ছাড়া টাঙাইল জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি মজিবর রহমান মিয়া সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থী হবে বলে জানা গেছে। রোমা নর্দ তথা টাঙাইল জেলার মধ্য দিয়ে শক্তিশালী প্রার্থী থাকবে এমনটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়াও জামিল আহমেদ,রিয়াজ হোসেন, লুৎফর রহমানটিপু, ,আব্দুল মজিদ বাবুল, মজিবর রহমান,এমকে রহমান লিটন,নাদিম মাহমুদ,শাহাদাৎ হোসেন রনি,বাবু ঢালী,সুমন ঢালী,শেখ রাশেদ,স্বপন দাস,শেখ ইসহাক,জি আর মানিক,সালাউদ্দিন আহমেদ,এস এ আল মাহমুদ রফিক,নাদিম মিয়া,নয়না আহমেদ,ফয়সাল আহমেদ,সালাউদ্দিন আলী,
আরো অনেকে বিভিন্ন পদে নির্বাচন করার সম্ভবনা রয়েছে।তবে সব কিছুই নির্ভর করছে মনোনয়ন পএ দাখিলের উপর কে কোন পদে জমা দেয়।
