টাওয়ার হ্যামলেটসে কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিস বন্ধের প্রতিবাদে অন্তত ৪০টি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে সমাবেশ

টাওয়ার হ্যামলেটসে কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিস বন্ধের প্রতিবাদে বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশন ইউকে (বিটিএ)সহ অন্তত ৪০টি সংগঠনের সম্মিলিত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার। কমার্শিয়াল রোড়ের লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমিতে এই বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশী টিচার্স এসোসিয়েশন ইউকে কর্তৃক আয়োজিত এই সমাবেশে স্থানীয় এবং রিজিওনাল প্রায় চল্লিশটির ও বেশি সংগঠন কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিস বন্ধের প্রতিবাদে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

এখানে উল্লেখ্য যে গত ১৮ ডিসেম্বর টাওয়ারের ক্যাবিনেট মিটিংয়ে কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

বি টি এ এর সভাপতি মোহাম্মদ আবু হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল বাসিত চৌধুরী ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ডক্টর রোয়াব উদ্দিনের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবু হোসেন কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিসের অতীত এবং বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন।

১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ টাওয়ার হ্যামলেটসে অভিবাসী পরিবারের বাচ্চাদের মাতৃভাষা তথা লেখাপড়ার উন্নয়নে দীর্ঘ ৪০ বৎসরের সাফল্য মন্ডিত প্রভিশনের সমাপ্তি হতে যাচ্ছে আগামী ১৯শে ফেব্রুয়ারি বাজেট অধিবেশনে।

১১ টি ভাষার সমন্বয়ে কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিস বা সি এল এস প্রায় ৪২ টি অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে পনেরশো শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করে থাকে। টাওয়ার হামলেটস কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বাজেট কর্তনের মাধ্যমে জি এস সি এবং এ লেভেল বন্ধ করে দেয়।Ks1 থেকে KS 4 লেখাপড়া উন্নতির কল্পে এর ভূমিকা ব্যাপক।বর্তমান প্রেক্ষিতে প্রায় ৮0 জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এই কমিটির সার্ভিসের আওতায় কাজ করে থাকেন।
কাউন্সিলের ক্যাবিনেট মিটিংয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর মেয়রের নেতৃত্বে কেবিনেট ৩ জন বাঙালি কেবিনেট মেম্বার ও একজন ডেপুটি মেয়র থাকা সত্ত্বেও কমিউনিটি সার্ভিস বন্ধের বিপক্ষে কোনো কথা বলেননি। এটা দুঃখজনক হলেও সত্যি যে প্রায় ২১ জন বাঙালি কাউন্সিলর থাকা সত্ত্বেও লেবার দলীয় গ্রুপে এটা আগেই গৃহীত হয়ে যায়।

বক্তারা তাদের বক্তৃতায় এই ঘৃণিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বলেন এটা ইনস্টিটিউশনাল রেসিজমের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন । এটা কোনভাবে মেনে নেয়া যায়না। কাউন্সিলররা আমাদের ভোটে নির্বাচিত। কিন্তু তারা কমিউনিটির স্বার্থের পরিপন্থী কাজে ব্যস্ত।

তারা আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে মাতৃভাষা ছিনিয়ে নিতে চায়। লেখাপড়ায় উন্নতি গতি থামিয়ে দিতে চায়।। এবং টাওয়ার হামলেট থেকে বাঙালি খেদাও এর ও বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলতেছে।
বক্তারা বলেন আমরা যদি সকলে একাত্মবোধ হয়ে এই কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিস প্রচলিত না রাখতে পারি তাহলে তাদের ষড়যন্ত্র গুলো একের পর এক বাস্তবায়িত হবে।

বক্তারা জোর দাবি করে বলেন
১) যদি কমিউনিটি সার্ভিস পুনর্বহাল না হয় তবে আগামী একুশে ফেব্রুয়ারি মেয়র এবং কাউন্সিলরদের শহীদ মিনারে স্বাগত জানানো হবে না।

২) যদি সিএ এল এস পুনর্বহাল না হয় তবে মেয়র এবং ডেপুটি মেয়র সহ সকল বাঙালি ক্যাবিনেট মেম্বারদের সামাজিকভাবে বর্জন করা হবে।

৩) সমগ্র সংগঠনগুলো মিলে অচিরেই আলতাব আলী পার্কে গণসমাবেশ হবে

৪) আগামী ১৯ শে ফেব্রুয়ারি মালবারি প্যালেসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে

৫) কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ অচিরেই মেয়র এবং কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

উক্ত সভায় অতিথির মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আহমাদুস সামাদ চৌধুরী চেয়ারম্যান চ্যানেল এস টেলিভিশন, ডঃ হাসনাত এম হোসেন MBE পেট্রোন গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল, টাওয়ার হামলেটস প্যারেন্টস সেন্টারের ডাইরেক্টর ডক্টর আবদুল হান্নান, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের প্রধান উপদেষ্টা শাহগির বক্ত ফারুক, কাউন্সিল অফ মস্ক এর চেয়ারম্যান মাওলানা শামসুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই সিনিয়র সভাপতি দেওয়ান গৌস সুলতান, লেবার দলীয় বি এ এম ই এ’র সভাপতি জুনেদ আহমেদ সুন্দর, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী, গ্রেটার সিলেট এর সভাপতি বারিস্টার আতাউর রহমান, ভয়েস অফ জাস্টিস এর সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন টাওয়ার হামলেটস stand-up to racism এর পক্ষে শিলা মেক রগর, কাউন্সিলর রুবিনা খান, কাউন্সিলর গাব্রিয়েলা সালভা মেক কালান, সাবেক কাউন্সিলর ওহিদ আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ নুরুল , সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল আসাদ, সাবেক কাউন্সিলর আমিনুর রহমান খান, একাউন্টেন্ট আব্দুর রকিব সাধারণ সম্পাদক ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই, টাওয়ার হামলেটস কলেজের সাবেক লেকচারার রেহানা রহমান, চাইনিজ স্কুলের হেড টিচার ম্যাগি জুই, আনসারুল হক বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, সুনামগঞ্জ সমিতির ও এমসি কলেজ পুনর্মিলনের পক্ষে ইকবাল হোসেন, কমিউনিটি নেতা আহাদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ইয়ুথ মুভমেন্ট এর পক্ষে নুরুল ইসলাম, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আনোয়ার খান,, মাসিক দর্পণ সম্পাদক রহমত আলী, ওয়াপিং বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের পক্ষে আতিকুর রহমান, সলিসিটর ফাহিম রহমান, টাওয়ার হামলেট উইমেন গ্রুপের পক্ষে হাসনা রহমান, বাংলাদেশী টিচার্স এসোসিয়েশন ইউকের পক্ষে মাহবুব হোসেন, মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, এডভোকেট শাহ ফারুক আহমেদ জামাল উদ্দিন আহমেদ, শফি আহমেদ, মোস্তফা কামাল মিলন, মজিবুল হক মনি, মোস্তাক চৌধুরী, অধ্যাপক শাহজাহান, রুশনারা গনি, শেফা বেগম, পপলার বাংলাদেশ সেন্টার এর পক্ষে ময়ূর মিয়া, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট রুবিনা হক, পপলার কমিউনিটি স্কুলের চেয়ারম্যান হাফেজ চৌধুরী, সৈয়দপুর শামসিয়া সমিতির পক্ষে কমিউনিটি নেতা আহমেদ কুতুব, থ্যামস বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন এর পক্ষে সুলতানা বেগম ও আতিয়া খান, আব্দুল গফুর সভাপতি জি এস সি পূর্ব লন্ডন, মাওলানা রফিক আহমেদ প্রেসিডেন্ট ভয়েজ অফ জাস্টিস, ইসবা উদ্দিন সভাপতি জি এস সি সাউথইস্ট, জয়নাল আবেদীন চেয়ারম্যান ট্যবিয়োট ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এসোসিয়েশন, কমিউনিটি নেতা জাহেদ আহমদ, এবং সমালিয়ান শিক্ষকা আয়েশা আলী এবং আল হুদা মসজিদের ঈমাম মাওলানা আব্দুর কাদের সালেহ।

Advertisement