আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিশেষ দূত সাইমস গ্যাস। তার সঙ্গে ছিলেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত মার্টিন লংডেন। মঙ্গলবার কাবুলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।আফগানিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী আবদুল গনি বারাদার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এবং তালেবান নেতা আবদুল সালাম হানাফির সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হন দুই ব্রিটিশ কূটনীতিক।২০২১ সালের ১৫ আগস্ট প্রায় বিনা বাধায় কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি। ক্ষমতার পালাবদলের পর এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবান সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হলো যুক্তরাজ্য। এতে মানবাধিকার ও নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলো নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
যুক্তরাজ্যের দাবি, বৈঠকগুলোতে আফগান ইস্যুতে ব্রিটিশ সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। আটকেপড়া ব্রিটিশ নাগরিকদের নিরাপদে দেশত্যাগের সুযোগ দেওয়া এবং আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে সহিংসতা বন্ধ ও নারী অধিকারের বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রদূত মার্টিন লংডেন। পোস্টে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের একটি ছবিও জুড়ে দিয়েছেন তিনি।টুইটে মার্টিন লংডেন বলেন, ‘তালেবান নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সব বিষয়ে উভয় পক্ষের মতের মিল হয়নি। তবে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তালেবানের পক্ষ থেকেও বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দলের অন্যতম মুখপাত্র আবদুল কাহার বালখি জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে।যুক্তরাজ্য অবশ্য প্রথম থেকেই তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিয়েছিল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তার দেশ আফগানিস্তানের সরকার বা বৈধ কর্তৃপক্ষ হিসেবে তালেবানকে স্বীকৃতি দেবে না। পরে অবশ্য এ ইস্যুতে কিছুটা নমনীয় হয় লন্ডন। এক পর্যায়ে বরিস জনসন জানান, আফগানিস্তানের জন্য একটি সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে যুক্তরাজ্য। প্রয়োজনে তালেবানের সঙ্গে কাজ করবে ব্রিটিশ সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার কাবুলে তালেবান সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠকে মিলিত হন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সাইমস গ্যাস।