ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগুস্তো সান্তোস সিলভার সাথে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তো নেতৃবৃন্দ। শনিবার রাত ৮টার দিকে পোর্তোর স্থানীয় পোর্তোগান্ধি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তোর আয়োজনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকীর উপস্থিতিতে পর্তুগাল-বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে অংশ নেন পর্তুগালের ক্ষমতাসীন স্যোশালিস্ট পার্টির পোর্তো শাখার সভাপতি ম্যানুয়েল পিজারো, পর্তুগিজ সংসদের এমপি থিয়াগো বারবোজা রিবেইরো, পোর্তো যুব স্যোসালিস্টের সভাপতি হুগো গিলবাইয়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জোয়াও কোয়েলো।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তোর সভাপতি শাহ আলম কাজল উপস্থিত সবাইকে অভ্যর্থনা জানান। পরে নৈশভোজের পূর্বে বক্তব্যে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাছে দুইটি দাবি আছে বলে জানান।
শাহ আলম কাজল বাংলাদেশে পর্তুগালের স্থায়ী দূতাবাস স্থাপনের দাবি জানান। দিল্লিতে পর্তুগিজ দূতাবাস হওয়ায় নানা ধরণের কনস্যুলার সেবা নিতে যাওয়া বাংলাদেশিদের নানান ধরণের ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয় তাই তিনি পর্তুগালের বাংলাদেশি কমিউনিটির সবার কথা মনে করিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে একটি স্থায়ী দূতাবাস স্থাপনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট দাবি জানান। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে কৃষিসহ বিভিন্ন পেশায় দক্ষ শ্রমিক নিতে আহ্বান জানান তিনি। পর্তুগাল ও বাংলাদেশের মধ্যকার বিভিন্ন বাণিজ্যিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন শাহ আলম কাজল।
দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও আলোচনায় স্থান পায়। বিশেষ করে নয়াদিল্লীতে পর্তুগিজ কনস্যুল্যার অফিসে নানা হয়রানি নিয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটির পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লিখিত আকারে জানানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগুস্তো সান্তোস সিলভা বলেন, ‘বর্তমানে ৭৮ দেশে আমাদের কনস্যুলার সেবা চালু রয়েছে। বাংলাদেশিরা যে ধরণের সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হচ্ছে আমরা তাদের জন্য এ ব্যপারগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। এছাড়াও পর্তুগালে যে সমম্ত বাংলাদেশিরা বসবাস করছেন তাদের জন্য কাজ এবং অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলো আমরা সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছি। নতুন দূতাবাস করার ব্যপারে আমাদের সরকারের অভ্যন্তরীণ আলোচনা এবং পর্যালোচনায় আমি আপনাদের দাবিটি তথা বাংলাদেশের নামটি মাথায় রাখবো।’
পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ কমিউনিটির বৈঠক, বাংলাদেশে দূতাবাস দাবি
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক অনেক পুরনো প্রায় ৫০২ বছরের। আমাদের জীবনে পর্তুগিজদের প্রভাব অনেক এবং আমাদের এই ঐতিহাসিক সম্পর্ক অনেক গভীর। আমাদের এবং পর্তুগিজদের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে, বিশেষ করে খাবারের। বাংলাদেশে দূতাবাস না থাকায় বাংলাদেশীরা অনেক সমস্যায় পড়ছেন। আমি নিজেও এটার ভুক্তভোগী। বাংলাদেশে পর্তুগালের স্থায়ী দূতাবাসের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি বিবেচনা করার আহবান জানান। ট্যুরিজম, টেক্সটাইল, কনস্ট্রাকশন খাতে পর্তুগালের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই খাতগুলোতে পর্তুগাল বাংলাদেশের সহযোগী হতে পারে। পর্তুগালের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে যাচ্ছেন আগের চেয়ে প্রায় তিনগুন বেশী। আগামী দিনে সেটি আরো বৃদ্ধি পাবে। এটি আমাদের পারস্পরিক বাণিজ্যের প্রসারের একটি উদহারণ।’
বৈঠকে উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নেতৃবৃন্দকে বিশেষ উপহার তুলে দেওয়া হয়। এবং ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তোর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম।